এক সমুদ্র প্রেম [পর্ব-২০]

সিকদার আর মজুমদার, দুই পরিবারের বৈঠক বসেছে রাশিদের ঘরে। শুধুমাত্র পরিবারের নিজস্ব লোকজন সেখানে। বৈঠকের বিষয়, ধূসরের মা*রপিট। আমজাদ সিকদারের মুখ গুরগম্ভীর। রা*গে ফুঁসছেন। রাশিদের দিক তাকাতেও লজ্জ্বা করছে। ভাইয়ের ছেলে বেড়াতে এসে, এমন এক কান্ড ঘটাল, মুখ লুকানোর জো নেই। গ্রামের চারদিকে খবর ছড়িয়েছে। যে লোক বাড়িতে এসে বলেছেন,তিনিই মুলহোতা এর। এখন কী হবে? মান ইজ্জ্বত কিচ্ছু বাকী আছে? আমজাদ সিকদার চোখ রাখলেন মেঝেতে। অসহ্য ভঙিতে দুপাশে মাথা নাড়লেন। মিনা বেগম স্বামীর দিক চেয়ে ঢোক গিললেন ক’বার। অসহায় নেত্রে আবার তাকাচ্ছেন জা’য়েদের দিকে। সবার মুখ চুপসে এইটুকুন। আমজাদ সিকদার চারপাশে চোখ বোলালেন,রুবায়দাকে শুধালেন

‘ আফতাব কোথায়?’

‘ ঘরে নেই।’

মিনমিনে কণ্ঠে জানালেন তিনি। আমজাদ সিকদার চেহারা কোঁচকালেন। এরকম সময় কই হাওয়া খেতে গেছে সে?

রাদিফকে সদর দরজায় পাহারায় রাখা হয়েছে। সবাই যে এই ঘরে ঝাঁক বেঁধে অপেক্ষায়, ধূসর চৌকাঠে পা রাখা মাত্রই সবার কান এড়িয়ে সে খবর পৌঁছে দিতে হবে।

রাদিফ অক্ষরে অক্ষরে ভদ্র ছেলে। তেমন পয়েন্টে পয়েন্টে সে বড় চাচার হুকুম মেনেছে। এইত আঙুল ধরে হাজির হলো ধূসর সহ। তার পড়নের নীল পাঞ্জাবি ঘামে ভেজা। কপাল,চুলেও চিকচিক করছে ঘাম। অবিন্যস্ত চুল হাত দিয়ে ঠেলতে ঠলতে পা রাখল কামড়ায়। পেছনে তার দুদিনের সঙ্গী তুহিনও এলো। ভেতরে এতজন কে একসাথে দেখে অপ্রতিভ হলো ধূসর। সে আসা মাত্রই থমথমে পরিবেশ পালটায়,গাঢ় হয়। সকলে এক যোগে তাকায়। পিউ কাচুমাচু ভঙিতে দাঁড়িয়ে। মা*রামা*রির ঘটনা সেও শুনেছে। কিন্তু হিসেব মিলছেনা। এখানে কাকে চেনে ধূসর ভাই? কেনই বা করবেন এমন? জবা বেগম রাদিফকে ইশারা করলেন বাইরে যেতে। ছোট মানুষ বড়দের কথায় থাকতে নেই। আপাতত সাদিফ,পিউ,পুষ্প আর বর্ষা ছাড়া কেউ-ই জায়গা পায়নি এখানে।

ধূসর কারো দিকে তাকালোনা। সোজাসুজি আমজাদকেই শুধাল,

” ডেকেছিলেন?”

তিনি ক্ষে*পে তাকালেন। একবার দেখলেন পাশে বসা রাশিদ কেও। পুরু কণ্ঠে শুধালেন,

‘ শুনলাম,মোরশেদের ছেলেকে মে*রেছো তুমি?’

ধূসর চিনতে না পেরে বলল,

” কোন মোরশেদ?’

রাশিদ মজুমদার বললেন,

‘ ওই যে ফার্মের ব্যবসায়ী। ওনার থেকেই তো সব মুরগী আনছি বর্ষার বিয়ের। ওনার ছেলে শিপন,তুমি নাকি ওকে পি*টিয়েছ বাবা?’

রাশিদের স্বর নরম। ধূসর সোজাসাপটা উত্তর করল,

‘ কার ছেলে জানিনা,তবে মে*রেছি একটাকে।’

আমজাদ সিকদার অবাক হয়ে বললেন,

” মে*রেছ,এটা আবার বলছো তুমি? লজ্জ্বাও লাগছেনা?’

ধূসর কাঁধ উচু করে বলল,

” লজ্জার কী আছে? ও অভদ্রতা করেছে,তাই মা*র খেয়েছে। দ্যাটস ইট।”

আনিস বললেন,

‘ কিন্তু তাই বলে বেড়াতে এসে, এরকম করা কী ঠিক ধূসর? এটা কিন্তু আমাদের বাড়ি নয়।”

‘ আমি জানি সেটা। ভালোমন্দ বিচার করার জ্ঞান আমার আছে চাচ্চু। কিন্তু ছেলেটা এমন এক কাজ করল,আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারিনি।”

” কী ওমন করেছে ও,যে ডাল ভে*ঙে বেধরম পে*টালে?”

” বেধরম পিটিয়েছি কে বলল? তাহলে তো ও বাড়িই যেতে পারতোনা।”

” ওতো যায়নি। সবাই ধরাধরি করে নিয়েছে।”

” একই কথা ।”

আমজাদ সিকদার ঠোঁট ফুলিয়ে জোড়াল শ্বাস নিলেন। নিজেকে শান্ত করার বৃথা চেষ্টা করে বললেন,

‘ কী করেছে ও? আমরাও শুনি একটু….”

ধূসর আড়চোখে একবার গুঁটিশুটি মেরে দাঁড়ানো পিউকে দেখে নেয়। ফের দৃষ্টি আনে আমজাদ সিকদারের ওপর। ভণিতা ছাড়াই জবাব দেয়,

” ও আমার কলিজায় হাত দিয়েছে।”

কথাটুকুন কারোরই মাথায় ঢুকলোনা। মুত্তালিব আগ্রহভরে বললেন,

‘ কী করেছে? একটু খুলে বলো বাবা।’

ধূসর একটু চুপ থেকে বলল ‘ আমার শার্টের কলার ধরেছে ও।’

সবাই আকাশ থেকে পরল। বিভ্রান্ত নজরে ধূসরকে দেখল। আমজাদ সিকদার হুতাশন করে বললেন,

” তাই জন্যে এভাবে মা*রবে? নাকমুখ ফাঁ*টিয়ে র*ক্ত বার করবে?”

ধূসর শক্ত কন্ঠে জানাল,

” হ্যাঁ। এরকম কাজ ও যতবার করবে ততবার মারব। অবশ্য মনে হয়না,আজকের পর আর সাহস করবে।”

প্রত্যেকে হতবাক হয়ে চেয়ে রইলেন। আমজাদ সিকদার মিনা বেগমকে বললেন,

‘ দেখেছো? দেখেছো তোমাদের ছেলের অবস্থা ? আরো লাই দাও সবাই মিলে। মাথায় তুলে লাফাও। এখন যদি ওই ছেলের পরিবার মামলা ঠুকে দেয়, কী হবে তখন?”

মিনা বেগম আস্তেধীরে বলতে গেলেন, ‘ আপনি শান্ত হোন,এভাবে….

ধূসর মাঝপথেই উত্তর করে,

‘ মামলা দিলে দেবে। ছোট খাটো যে কোনও ব্যাপারে জেল খাটতে হয় জেনেই রাজনীতিতে নেমেছিলাম। সিকদার ধূসর মাহতাব এসবে ভ*য় পায়না।”

আমজাদ সিকদার বিহ্বল হলেন। কিছু বলার ভাষা নেই। পরমুহূর্তে উত্তেজিত হয়ে ডেকে উঠলেন,

” আফতাব! আফতাব!”

জবা নেগম নিভু কণ্ঠে বললেন ‘ মেজো ভাইজান ঘরে নেই। আমি দেখে এসেছি।’

‘ কেন নেই? কোন চুলোয় গিয়েছে ও? ছেলে এত বড় কান্ড করে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,আর ও? এই সাদিফ,যাওতো গিয়ে দেখো কোথায় সে।”

সাদিফ ‘ যাচ্ছি’ বলে ঘর ছাড়ল। চাপানো দরজা আবার চাপালেন সুমনা বেগম। রাশিদ মজুমদার সুস্থির কণ্ঠে বললেন,

‘ থাক ভাইজান, যা হবার হয়েছে। ধূসরের মাথা গরম,বাচ্চা ছেলে করে ফেলে….”

” বাচ্চা ছেলে? আজ বিয়ে দিলে কাল বাচ্চার বাপ হবে। এসব বোলো না রাশিদ,শুনতে ভালো লাগেনা। তার থেকে বরং তুমি আমায় ক্ষমা করো ভাই,আমার বাড়ির ছেলের জন্যে তোমার সন্মান ন*ষ্ট না হয়।”

” সন্মান ন*ষ্ট হবে কেন? এক হাতে তো তালি বাজেনা। নিশ্চয়ই শিপনের ও কিছু অন্যায় আছে,নাহলে ধূসর কখনও নিজে থেকে গায়ে হাত তুলবে কেন বলুন তো!”

মিনা বেগম এতক্ষনে মোক্ষম সুযোগ পেলেন। ভাইয়ের কথায় হৈহৈ করে বললেন

‘ হ্যা সেইত। আমারও তো একই কথা। আমাদের ধূসর বিনা কারনে কাউকে মা*রবে কেন? নির্ঘাত ওই ছেলে কিছু করেছে। “

আমজাদ বিরক্ত চোখে চাইলেন,

‘ করেছো তো,শোনোনি? কলার ধরেছেন জাহাপনার। কী মারাত্মক পাপ করেছে ভাবা যায়?”

কথাটা বলে মাথায় হাত দিলেন তিনি। বিড়বিড় করে বললেন,

‘ ভাবলাম ছেলেটা শোধরাবে। অথচ না। বিয়ে খতে এসেও সে মানুষ পে*টাচ্ছে।”

” আমি একটা কথা বুঝতে পারছিনা, সবাই এমন করছো কেন? আচ্ছা,ওকে মে*রেছি বলে আপনার খারাপ লেগেছে বড় আব্বু? বেশ,আজই ওকে ডেকে পাঠাব,ও নিজে ক্ষমা চেয়ে যাবে। শান্তি পাবেন তখন?’

আমজাদ সিকদার তাজ্জব বনে বললেন,

” যাকে মা*রলে সে এসে ক্ষমা চাইবে?”

” চাইবে। দোষ যার, ক্ষমা চাওয়ার দ্বায় ও তার।”

আনিস,আমজাদ হতাশ,আ*হত শ্বাস নিলেন। ধূসর বলল

‘ আমার মনে হয় আপনাদের আর কিছু বলার নেই। আমি তাহলে যাই,বিশ্রাম নেব। ক্লান্ত লাগছে।”

এবারেও তব্দা খেল সবাই। ধূসর বেরিয়ে গেল। আনিস হা করে বললেন

‘ যে মা*র খেল সে বিছানায় পরে আছে,আর যে মারল সে বিশ্রাম নিতে যাচ্ছে? ‘

তুহিন ছিল নিরব দর্শক। সেও ধূসরের পিছু চলতে গেলে রাশিদ মোটা কণ্ঠে ডাকলেন,

” তুহিন!”

ছেলেটা দাঁড়িয়ে যায়। ভীত নজরে ফিরে তাকায়,

‘ জি কাকা?’

‘ তুই কিছু জানিস এ ব্যাপারে?’

তুহিন আমতা-আমতা করে বলল

‘ জি। আমিতো ওখানে ছিলাম না,পরে এসেছি। ‘

রাশিদ মেনে নিলেন। বললেন ‘ যা।’

কিন্তু পিউ মানতে পারল না। তুহিনের হাব-ভাব সন্দেহজনক। ছেলেটা এই দুদিনে ধূসরের সাথে ছাঁয়ার মত ছিল। ও নিশ্চয়ই কিছু জানে। তুহিন বের হতেই সভা ভঙ্গ হলো। বড়রা আলোচনায় মন দিলেন। মোরশেদ বিচার আনলে কী করবেন সে নিয়ে। মুত্তালিব বুদ্ধি দিচ্ছেন, অবশ্যই ধূসরের সাপোর্ট নিয়ে। হাত পা তো ভা*ঙেনি,তাহলে ক্ষ*তিপূরন কীসের? কিন্তু আমজাদ জানালেন, তিনি ক্ষ*তিপূরণ দেবেন। সমস্যা নেই। তবু যেন বদনাম না হয়।

পিউ সুযোগ বুঝে ঘর থেকে বের হলো। তুহিন ধূসরের কক্ষে যাওয়ার জন্যে তিন তলার সিড়িতে উঠেছে কেবল, এর মধ্যেই ধড়ফড়িয়ে ডাকল সে,

‘ এই যে ভাইয়া শুনুন!’

তুহিন থমকায়। ঘুরে তাকায়। পিউ ছুটে এসে সামনে দাঁড়াল। তুহিন শুভ্র হেসে বলল,

‘ ভালো আছেন ভা….আপু?”

পিউ ঘন ঘন বলল

‘ জি জি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? ভালো তাইনা? আচ্ছা একটা কথা বলুনতো ,ধূসর ভাই মা*রামা*রি কেন করেছেন?’

তুহিন ভ্যাবাচেকা খেল। এত গড়গড় করে, এক শ্বাসে কথা হলে কেউ! ধাতস্থ হতেই চুপ মেরে যায়। ভেবেচিন্তে বলে,

‘ ওই যে, ও ঘরে ভাই যা বললেন কলার…’

এটুকু শুনতেই পিউ অনীহ কন্ঠে বলল

‘ কলার ধরেছে বলে মে*রেছে,? এসব কেউ বিশ্বাস করলেও আমি করছিনা। সব মিথ্যে,আমি জানি। আপনার কাছে এসেছি সত্যিটা শুনতে । নিন, চটপট বলে ফেলুন দেখি। ‘

” মিথ্যে নয়,সত্যি বলছি।”

” কিন্তু আপনার মুখ দেখে তো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ঘটনা মিথ্যে।”

তুহিন বিভ্রান্ত হয়ে চেহারায় হাত বোলাল। পিউ লাফিয়ে বলল,

‘ দেখলেন? তার মানে আপনি মিথ্যেই বলেছেন। এবার অন্তত সত্যি বলা উচিত। বলুন বলুন কেন মা*রামা*রি করেছেন উনি?’

তুহিন ভাবতে বসল। পিউ ফের তাড়া দেয়। তুহিন অসহায় কণ্ঠে বলল,

‘ কাউকে বলা নিষেধ। শুনলে ভাই রা*গ করবেন।’

পিউ মাছি তাড়ানোর মত হাত নেড়ে বলল,

‘ আরে ধুর! নিশ্চিন্ত থাকুন। ধূসর ভাইয়ের কেন,কারো কানেই যাবেনা। আপনি আমায় বিশ্বাস করুন। আমিতো আপনার ছোট বোনের মত তাইনা ভাইয়া?’

ইমোশোনাল কথাবার্তায় তুহিন গলে গেল। ঠোঁট ভিজিয়ে আশপাশ দেখল সতর্ক চোখে। গলা নামিয়ে বলল,

‘ আসলে হয়েছে কী,দুপুরে যখন আপনারা সবাই নাঁচছিলেন? শিপনই আপনার পেটে চিমটি কে*টেছিল। ধূসর ভাই নিজে দেখেছেন,আর তাই ওকে আমাকে দিয়ে ডেকে নিয়ে মে*রেছেন। লোকজন চলে না এলে খবর ছিল ওর। নাকে কটা সেলাই লাগে কে জানে! আমি যে বলে দিলাম কাউকে বলবেন না যেন।”

পিউ স্তব্ধ,বাকরুদ্ধ৷ তুহিন ফের কিছু বলবে এর মধ্যে ওপর থেকে নেমে এলো সুপ্তি। সিড়িতে দাঁড়িয়ে ছোট কন্ঠে জানাল,

‘ আপনাকে ধূসর ভাইয়া ডাকছেন।’

ছেলেটা আর দাঁড়াল না। দ্রুত পায়ে উঠে গেল তিন তলায়। পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে রইল পিউ। চোখের পাতা অবধি নড়ছেনা দেখে সুপ্তি ভ্রুঁ কোঁচকাল। নেমে এসে পাশে দাঁড়াল।

‘ কী হয়েছে আপু? ‘

পিউ উত্তর করেনা। সে বিস্ময়াকুল হয়ে তাকিয়ে। সুপ্তি হাত দিয়ে মৃদূ ধা*ক্কা দিলো।

‘ এই পিউপু,কী হলো তোমার?’

পিউ নড়ে ওঠে। সম্বিৎ ফেরে। হা- হুতাশ করে বলে,

‘ আমাকে ধর সুপ্তি। আমার মনে হয় অ্যা*টাক -ফ্যাটাক হয়ে যাচ্ছে।’

***

আফতাব সিকদার ওয়াশরুম থেকে বের হলেন। সচেতন চোখে ঘরের পুরোটা দেখলেন। এতক্ষনে বিচারকার্য শেষ নিশ্চয়ই। বেঁচে গেলেন তাহলে। তিনি আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে শুয়ে পরলেন বিছানায়। কম্বল মুড়ি দিতেই রুবায়দা বেগমের কণ্ঠ ভেসে এলো,

‘ তুমি কোথায় ছিলে এতক্ষন?’

আফতাব সিকদার চোখ বড় বড় করলেন। পরপর হাই তুলতে তুলতে কম্বল নামিয়ে বললেন,

‘ ঘুমোচ্ছিলাম।’

রুবায়দা বেগম এগিয়ে এলেন।

‘ ঘুমোচ্ছিলে? কই,আমরা তো ঘরে এসে দেখে গেলাম,ঘর তো ফাঁকা ছিল।’

‘ আমিতো মাত্রই এলাম।’

‘ ও।’

‘ খুঁজছো কেন? কিছু হয়েছে?’

রুবায়দা বেগম পাশে বসলেন। মন খারাপ করে বললেন,

‘ কী আবার হবে? তোমার ছেলে মারপিট করছে,শোনোনি? কত করে বললাম,চলো ওর একটা বিয়ে দেই। বউ আনলে সব ঠিক হয়ে যাবে। শুনছোনা।’

আফতাব সিকদার ভাবনায় পরে গেলেন। আসলেই কী বউ আনলে ছেলে পাল্টাবে? যদি পালটায় তবে মন্দ হয়না। নিজেও শান্তি পাবেন। মাথা দুলিয়ে বললেন,

‘ বাড়ি ফিরে নেই।’

_____

রাত নেমেছে। অথচ নিকষ , গাঢ় অন্ধকার মজুমদার বাড়ির জমকালো আলোর সামনে মাথা তুলতে পারছেনা। তিন বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা বাড়ি। সমস্ত দেয়াল জুড়ে লাগানো চোখ ধাঁধানো লাইটিং। লাল- সবুজ বাতি জ্বলছে,নিভছে। এক মুহুর্ত সাউন্ড সিস্টেমটার রেহাই নেই। একেকজন ফোন কানেক্ট করে করে চালাচ্ছে পছন্দের গান। সবাই ব্যস্ত কাজে। পিউয়ের মন ফুরফুরে। উড়ছে সে প্রজাপতির ন্যায়। ধূসর তাকে ছোঁয়ার অপরা*ধে কাউকে মে*রেছে,কথাটা যতবার ভাবছে আবেগে গলে গলে পরছে। কণ্ঠে অবিশ্বাস নিয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করছে,

‘ এত ভালোবাসেন উনি আমায়? ‘

কিন্তু তার এই উচ্ছ্বাস,এই উন্মাদনা বেশিক্ষন স্থায়ী হলোনা। আগন্তুকের ন্যায় সাতটার দিকে বাড়িতে পা রাখল মারিয়া। ডানে বামে নয়, সোজা সে বর্ষার ঘরে গিয়েছে। পিউ, শান্তা,মৈত্রী, সুপ্তি,রাদিফ,রিক্ত রোহান ছাড়াও বিয়ে বাড়ির সব বাচ্চা-গাচ্চা তখন এ ঘরেই। মারিয়া এসেই পেছন থেকে চোখ চেপে ধরল বর্ষার। বর্ষা ভড়কে গেল। কৌতুহলে ‘কে’ ‘কে ‘করল। পিউ রিমুভার দিয়ে, বিশাল মনোযোগে নেলপলিশ তুলছিল পায়ের। রাদিফ বিস্ময় নিয়ে যখন আওড়াল,

‘ মারিয়া আপু?’

পিউ তড়িৎ বেগে মুখ তুলল। চারশ আশি ভোল্টেজের ঝট*কা খেল ওকে দেখে। মারিয়া হাত ঢিলে করতেই বর্ষা ত্রস্ত ঘুরে তাকায়। সে ঠোঁট উলটে বলল,

‘ যা,আগেই নাম বলে দিয়েছে রাদিফ।’

বর্ষার ওসবে কান নেই। সে প্রবল বেগে জাপ্টে ধরল ওকে। খুশিতে জ্ঞান হারানোর উপক্রম। কণ্ঠে অবিশ্বাস নিয়ে বলল,

‘ তুই সত্যি এসেছিস? আমিতো ভাবলাম আসবিইনা।’

মারিয়া হেসে বলল,

‘ ধূর বোকা! তোর বিয়ে আর আমি আসব না?’

বর্ষার চোখ ছলছল করে ওঠে।

‘ কতদিন পর দেখা! কেমন আছিস? শুকিয়ে গেছিস। অনেক খাঁটিস তাইনা?’

‘ ওসব ছাড়,তোকে কী সুন্দর লাগছে রে বর্ষা! একদম টুকটুকে বউ। ‘

বর্ষা ঠোঁট ভরে হাসল। ‘ মায়ের সাথে দেখা হয়েছে?’

‘ না। চাচী বোধ হয় রান্নাঘরে। আমিতো সোজা এখানে এলাম।’

পুষ্প ফোনের লাইন কে*টে বারনাদা থেকে ঘরে এলো। মারিয়ার পেছন থেকে দেখে মুখ দেখার জন্যে এগিয়ে গেলো। গালের এক পাশ দেখতেই বিস্ময় সমেত বলল,

‘ মারিয়া? ‘

মারিয়া পাশ ফেরে। পুষ্পকে দেখে উঠে দাঁড়ায়। হেসে জিজ্ঞেস করে ‘ কেমন আছো?’

পুষ্প আড়চোখে মেঝেতে বসা পিউয়ের দিক দেখল। সে তখনও বিমুঢ় হয়ে তাকিয়ে। বিভ্রমে ভুগছে, এই মেয়ে এখানে কী করে?

পুষ্প কোনও মতে জবাব দিল ‘ ভালো আছি,আপনি কেমন আছেন?’

‘ আপনি করে বলছো কেন?আমিতো বর্ষার বন্ধু,তুমি করে বলো।’

পিউয়ের কপাল বেঁকে এলো। মারিয়া বর্ষা আপুর বন্ধু? তাহলে ধূসর ভাই যে বলেছিলেন ওনার বন্ধু সে? মিথ্যে কেন বলেছেন উনি?

এরমধ্যেই মারিয়া ডেকে ওঠে, ‘ এই পিউ! কী খবর, কেমন আছো? ‘

পিউ হুশে এলো। ক্ষীন স্বরে জানাল ‘ ভালো।’

বর্ষা অবাক হয়ে বলল,

‘ তুই ওদেরকে চিনিস?’

‘ হ্যাঁ। আমিতো পিউকে পড়াই। ও আমার ছাত্রী।’

বর্ষার মাথার ওপর দিয়ে গেল সব।

পুষ্প বলল ‘ ঠিক আছে। তোমরা গল্প করো,আমি আসছি।’

সে তাড়াহুড়ো পায়ে বের হয়। পিউ মন্থর হয়ে বসে থাকে। সে এত অবাক হলো মারিয়াকে দেখে। কই মারিয়া তো অবাক হয়নি। একটুওনা। বরং ভাবভঙ্গি কী স্বাভাবিক! ওকি তবে আগে থেকেই জানত তারা এখানে?

***

ধূসর শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে দরজা ছেড়ে বের হলো মাত্র। ওমনি সামনে পরল পুষ্প। সেও আসছিল এ ঘরে। দুজন দুজনকে দেখে দাঁড়িয়ে যায়। পুষ্প ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,

‘ ভাইয়া কোথাও যাচ্ছিলেন?’

‘ হ্যাঁ। কিছু বলবি?’

‘মারিয়া এসেছে।’

ধূসর ছোট করে বলল ‘ ও।’

পুষ্প ধীরস্থির কণ্ঠে বলল,

‘ পিউটা যদি উল্টোপাল্টা ভাবে?”

ধূসর হাতা থেকে চোখ তোলে,পরপর আবার নামায়,

‘ তোর বোনের কাজইতো একটা ।’

পুষ্প চিন্তিত কণ্ঠে বলল ‘ কী হবে এখন?’

ধূসর নির্লিপ্ত ‘ আমি আছি,চিন্তা নেই।’

ধূসর এগোতে নিলেই পুষ্প উদ্বেগ নিয়ে বলল,

‘ আজেবাজে কিছু করে বসলে?’

ধূসর দাঁড়িয়ে যায়। না তাকিয়েই বলে দেয়,

‘ থা*প্রে গাল লাল করে দেব ওর। ভাবিস না।’

তারপর চলে গেল সোজা। পুষ্প বুক ফুলিয়ে শ্বাস ফেলল বেদনার। বোনের জন্যে চিন্তায় মাথাটা ফেঁ*টে যাচ্ছে। একদিকে বাচ্চা পিউ, অন্যদিকে বুড়ো হয়েও বাচ্চামো করা ইকবাল,দুটোকে সামলাতে হিম*শিম খাওয়ার অবস্থা তার। ধূসর ভাই এত ভ্রুক্ষেপহীন কী করে থাকেন কে জানে?

***

‘মারিয়া এসেছে নাকী শুনলাম।’

ময়মুনা খাতুন হন্তদন্ত ভঙিতে ঘরে ঢুকলেন। যেন কেন না কে এসছে! মারিয়া ওনাকে দেখেই এগিয়ে গেল। জড়িয়ে ধরে বলল

‘ কেমন আছো চাচী?’

‘ খুব ভালো আছি। তুই এসেছিস শুনেই কাজ ফেলে ছুটে এলাম। কতদিন পর দেখলাম তোকে।আল্লাহ কী শুকিয়েছিস!

‘ উফ! আসার পর থেকে তোমার মেয়েও একই কথা বলছে। এবার তুমি রেহাই দাও অন্তত।

ময়মুনা হাসলেন। জিজ্ঞেস করলেন,

‘ আপা কেমন আছে?’

‘ ভালো। ‘

‘ ঢাকা গিয়ে তো ভুলে গেছিস।’

‘ কী যে বলো! তোমাদের ভোলা সম্ভব?’

পেছন থেকে বর্ষা বলল ‘ হয়েছে থাক,এত আহ্লাদ করতে হবেনা এখন। কত কিছু বলে আনতে হয়েছে ওনাকে।’

‘ আমি কি করব? টিউশন থেকে সহজে ছুটি পাওয়া যায়? এইত আসার আগেও একটা করে এলাম। ‘

শান্তা মুখ কালো করে বলল

‘ মারিয়াপু তো আমাকে চেনেইনা। ‘

সুপ্তিও তাল মেলায়,

‘ হ্যাঁ। এই যে আমরা কতক্ষন ধরে বসে আছি, দেখছেইনা। ‘

মারিয়া মাথায় হাত দিয়ে বলল,

‘ সর্বনাশ! কী বলে মেয়েগুলো? তোমরা আমার কত আদরের বলোতো। তবে হ্যাঁ, তোমাদের বোন কে পেয়ে সব ভুলে গেছি।’

বর্ষা ভেঙচি কা*টে। পরপর হেসে ফেলে।

পিউয়ের মাথা চক্কর দিচ্ছে এসব দেখে। তার নানাবাড়ির পুরো গোষ্ঠি মারিয়াকে চেনে। শুধু চেনেইনা, এরা তাকে পেয়ে আহ্লাদে গদগদ। সে উঠে বর্ষার কাছে গিয়ে দাঁড়াল। আস্তে করে জিজ্ঞেস করল,

‘ আপু,মারিয়াপু কে কীভাবে চেনো তোমরা?’

‘ আমরা তো একই স্কুলে পড়েছি,কলেজেও। সেই ক্লাস সিক্স থেকে বেস্টফ্রেন্ড। ইন্টারমিডিয়েট শেষে রওনাক ভাই, ওকে ঢাকা নিয়ে যান। পাব্লিকে ভর্তি করানোর জন্যে। তারপর এই দুই বছর পর দেখা হলো।’

পিউ এক পা পিছিয়ে গেল। রা*গে,দুঃ*খে দাঁত চে*পে ধরল। চোখ ভিজে উঠল ভীষণ ক*ষ্টে। ধূসর ভাই মিথ্যে বলেছেন তার মানে? মিথ্যে পরিচয়ে মারিয়াকে এনেছেন বাড়িতে? কেন? নিশ্চয়ই এর ভেতরের গল্পটা কুৎসিত,জঘ*ন্য তাই। পিউয়ের তরুনী মন নেতিবাচক ভাবনায় তলিয়ে যায়। মস্তিষ্ক ডু*বে যায় বি*শ্রি চেতনায় । ধূসরের প্রতি এক সমুদ্র প্রেম উত্থলে পরে ক্ষো*ভে। যদি মারিয়ার সাথেই কিছু থাকে,আড়ালে আবডালে, তবে আজ সারাটাদিন কেন ওমন করল তার সাথে? কেন তার মন নিয়ে খেলল? কেন ছুঁলো ? পিউয়ের গাল বেয়ে জল গড়ায়। চোখ বুজে নিজেকে শক্ত করে। আজ ওই ধূর্ত লোকের মুখোমুখি হবে । জানতে চাইবে এসবের মানে কী? কী চায় সে?

পিউ হনহনিয়ে ঘর থেকে বাইরে আসে। কয়েক কদম এগোতেই ধূসর সামনে এসে দাঁড়াল। পিউয়ের চোখ তখন টইটুম্বুর। উত্থলে পরছে জল। ধূসরকে দেখতেই কটম*ট করল। অথচ সে মানুষটার ভাবাবেগ হলো না। বুকের সাথে হাত ভাঁজ করে দাঁড়াল। মিটিমিটি হেসে ডান ভ্রুঁ উঁচাল। পিউ তাজ্জব হয়। তাকে কাঁদ*তে দেখেও ধূসর ভাই হাসছেন?

রে*গেমেগে কিছু বলতে গেল,ওর আগেই কোত্থেকে ছুটে এলেন রুবায়দা বেগম। কথা গিলে ফেলল পিউ। তিনি ছটফটিয়ে বললেন,

‘ এই ধূসর,জানিস, মারিয়া এসেছে এখানে?’

ধূসর আরেকবার পিউয়ের দিকে তাকাল। মেয়েটার সরু নাক লালিত,ক্ষনে ক্ষনে ফুঁসছে আবার। ধূসর ঠোঁট কা*মড়ে হাসে। মায়ের দিক তাকায়। বলতে গেল কিছু। তার মধ্যে আবার হুড়মুড়িয়ে হাজির হলেন মিনা বেগম। তিনিও উদিগ্রীব হয়ে আওড়ালেন,

‘ হ্যাঁ রে ধূসর তুই এখানে? জানিস মারিয়া এসছে। এ বাড়িতে ও এলো কী করে?’

ধূসর মৃদূ হেসে বলল,

‘ আস্তে, এত হাইপার হওয়ার কিছু হয়নি। মারিয়াদের বাড়িও এখানে।’

মিনা বেগম ভ্রুঁ গোঁটালেন ‘ এখানে? এখানে কোথায়? আমার বাপের বাড়ির এলাকায়, আর আমি জানিনা?

‘ কোন বাড়ি তা ঠিক জানিনা। তবে সম্ভবত ওর বাবার নাম গফুর হালদার। ‘

মিনা বেগম ভ্রু কপালে তুলে বললেন

‘ গফুর হালদার? ওই সরকারি চাকরি করতেন যে….’

‘ জানিনা। আমি ওর ভাইকে চিনি। ওর ভাই রওনাক আমাদের পার্লামেন্ট এর সদস্য ছিল। ‘

রুবায়দা বেগম কৌতুহল নিয়ে বললেন ‘ কিন্তু তুই যে বললি মারিয়া তোর বান্ধবী? ওতো বর্ষার বয়সি।’

পিউ বিদ্বিষ্ট হয়ে আরেকদিক তাকাল। এসব শুনলেও গা জ্ব*লছে। ধূসর শান্ত স্বরে বলল

‘ মা, বলতে দাও আমাকে? গত বছর মিছিলে যে গোলাগুলি হয় তাতে আ*হত হয়েছিল রওনাক। আর হাসপাতালে নেয়ার আগেই মা*রা যায়। এদিকে বাবাও নেই। এরপর থেকে মারিয়াই টুকিটাকি টিউশন করে ওর আর ওর মায়ের খরচা চালাচ্ছে। রওনাকের সূত্রেই ওকে চিনতাম। পার্লামেন্টের সবাই মিলে কয়েকবার গিয়েওছিলাম ওদের বাড়িতে। রওনাকের দাফনকাজও আমরাই করেছি। ওদের অবস্থা সবই জানি। তাই ভাবলাম, এই দুঃসময়ে মেয়েটাকে একটু সা্হায্য করি। একটু পাশে দাড়াই বিপদে। পিউকে পড়িয়ে মাসে আট হাজার টাকা পাওয়া, এটাও মেয়েটার জন্যে অনেক। সব কিছু ভেবেচিন্তেই ওকে পড়াতে এনেছি। ‘

পিউ চমকে তাকাল। রুবায়দা বেগম বললেন,

‘ কিন্তু তাই বলে বন্ধু বলতে হলো কেন? সত্যিটা বললেই পারতিস!’

ধূসর শ্বাস ফেলল। অকপটে বলল

‘ ইচ্ছে করেই মিথ্যে বলেছি। কারন আমিত অনেক কে চিনি। তারা যখন শুনতো, মারিয়া আমার পরিচিত একজনের বোন, কোনও কিছুই তাদের মাথায় ঢুকতোনা আর। নিজেদের মত কী কী ভেবে বসতো গড নোস।’

মিনা বেগম বললেন,

‘ কে ভাবতো এরকম?’

‘ যে ভাবার সে এখনও ভাবছে।’

পিউ মাথা নুইয়ে ফেলল। চোরের মত চেহারা বানাল। প্রবল অপরা*ধবোধ ফুটে উঠল আননে। কী মারাত্মক ভুলটাই না করতে যাচ্ছিল। ছি! শেষ মেষ ধূসর ভাইকে অবিশ্বাস করে বসলি? এই তোর ভালোবাসা পিউ?

‘ আর কোনও প্রশ্ন?’

রুবায়দা বেগম, মিনা বেগম এক যোগে দুদিকে মাথা নাড়েন। প্রশ্ন নেই। ধূসর ঠোঁট ফুলিয়ে শ্বাস টানে। পুনরায় অবলোকন করে পিউকে। সে মাথা আর তুলছেনা। ধূসর চলে যেতেই, রুবায়দা বেগম দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,

‘ আহারে! মারিয়া মেয়েটার কী ক*ষ্ট! অথচ কত হাসিখুশি থাকে। দেখে বোঝাই যায়না। ‘

পিউ সহমত। যা শুনল তাতে নিজের মনটাও খা*রাপ। কী গা*লম*ন্দটাই না করেছে মেয়েটাকে এতদিন। ইশ! সে আসলেই একটা আহাম্মক। পরপর ধূসরের প্রতি ভালো লাগায় বুক জুড়াল। মানুষটা কত ভালো! একটা মেয়ের বিপদে সাহায্য করছেন।

মিনা বেগম,রুবায়দার কথায় মাথা নাড়তে নাড়তে মেয়ের দিক তাকালেন। চোখে, গালে জল দেখে আঁত*কে বললেন,

‘ একী,তুই কাঁ*দছিস কেন?’

পিউ তড়িঘড়ি করে চোখ মুছে বলল ‘ কই, কই?’

‘ কই কই কী? চোখে জল কেন? ‘

রুবায়দা বেগম উতলা হয়ে বললেন, ‘ ধূসর বলেছে কিছু?

পিউ দুদিকে মাথা নেড়ে বলল,

‘ না না, ঠান্ডা লেগেছে।’

‘ ঠান্ডা লাগলে নাক দিয়ে পানি পরে,তোর চোখ দিয়ে পরছে?’

মায়ের তীক্ষ্ণ চোখ, পিউ থতমত খেয়ে বলল,

‘ আমার সব কিছু একটু ইউনিক। ঠান্ডা লাগলে চোখ দিয়েও পানি পরে। একটু পর কান দিয়েও পরবে। ওসব তুমি বুঝবেনা। এগুলো আধুনিক যুগে হয়। তুমি সেকেলে। সরো দেখি, ভেতরে যাই।’

পিউ মাকে ঠেলেঠুলে ফের বর্ষার ঘরে ঢুকে যায়। ভদ্রমহিলা তব্দা খেয়ে বললেন

‘ ঠান্ডা লাগারও আবার যুগ আছে ? ‘

চলবে,…

  • নুসরাত সুলতানা সেঁজুতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *