সকাল থেকেই কালো মেঘে ছেয়ে আছে আকাশ। শীতের মৌসুমে মিষ্টি রোদে উদিত সূর্য আজ লাপাত্তা হয়ে গেছে মেঘেদের আড়ালে। এর অবশ্য কারণও আছে। বঙ্গপসাগরে নিম্নচাপের ফলে নাকি ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়েছে। যেটা ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে।
তাইতো আবহাওয়া দপ্তর থেকে বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে। যা আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। সাথে আরেকটি তথ্য প্রচার হচ্ছে। আর তা হলো – ‘ কুমিল্লা শহরের এমপি রাসেল সরকার অকালে মৃত্যুবরণ করেছেন। ’
আর সাথে এসব তথ্যও প্রচার করা হচ্ছে ‘ রাসেল সরকারের বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্যসহ কালো টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ’
এই খবরগুলো অতিমাত্রার সাউন্ড দিয়ে সামনের দেয়ালের প্রজেক্টরের স্ক্রিনে দেখানো হচ্ছে। কক্ষের মধ্যবর্তী স্থান জুড়ে রাখা বিশাল টেবিল ঘিরে বসে রয়েছে যুবক হতে শুরু করে ষাটোর্ধ লোক আর মহিলা। আর পুরো রুমটির এদিক ওদিকে কালো পোশাক পরিহিত কিছু গার্ডস দাঁড়িয়ে আছে। জনসংখ্যাটা বেশি হলেও টিভির সাউন্ড বাদে কক্ষটি জুড়ে চলছে পিনপতন নিরবতা। একেকজনের মুখায়ব একেক রকম প্রতিক্রিয়ায় ছেয়ে আছে। তাদের পোশাক আশাক দেখে বোঝা গেলো তারা সাধারণ ব্যক্তি-বর্গ নয়। এই দেশের বিভিন্ন চুনোপুঁটিসহ, রাঘববোয়াল।
‘‘ রাসেল মারা গেলো! এর মানে কি এটাই বোঝানো হচ্ছে, নেক্সট টার্গেটে আমরা রয়েছি? যতই বলা হোক না কেন রাসেলের মৃত্যু স্বাভাবিক। তবে আমরা তো জানি আমাদের কুকর্মের কথা অলরেডি একজন উকিল জেনে গিয়েছে। এখন কি আমরা তাকে সন্দেহ করবো না? নাকি কোনো অদৃশ্য শক্তি এসে রাসেলকে মেরে গিয়েছে, এই মতবাদে বিশ্বাসী হবো?’’
চোয়াল শক্ত করে দৃঢ় স্বরে কথাগুলো বলে থামলো উশান। ছেলের এমন তেজী কণ্ঠে ভ্রুদ্বয়ের মাঝে গাঢ় ভাঁজ ফেললেন উরফান। চোখ ঘুরিয়ে পুরো টেবিল ঘিরে বসে থাকা মানুষগুলোকে একবার পরখ করলেন। ছেলের উদ্দেশ্যে শান্ত স্বাভাবিক আওয়াজে বললেন,‘‘ শান্ত হও উশান। মাথা গরম করলে তো আর এই সমস্যা সমাধান হবে না। ঠান্ডা মাথায় যুক্তিতর্ক দাও।’’
উশান বাবার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে একবার তাকিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলো। কক্ষটির বাইরে আসতেই চোখ গেলো সামনে প্রশান্তর কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে থাকা শিমুর দিকে। মেজাজ ঠান্ডা করার চেষ্টা করলো। ধীরপায়ে এগিয়ে গেলো তাদের দিকে।
‘‘ অনেকদিন পর দেখা হলো শিমু। ’’
পরিচিত কণ্ঠে মাথা তুলে সামনে তাকালো আশিন। সামনের সুদর্শন পুরুষটিকে দেখে ঠোঁটে হাসির রেখা টেনে বললো,‘‘ এটা তো তোমার সাতজন্মের কপাল মি. উশান।’’
উশান চমৎকার হাসলো,‘‘ শিমু কি এতটাই সেলিব্রেটি তবে! ’’
‘‘ হয়তোবা। ’’
‘‘ চলো কফি খেতে খেতে কথা বলি। ’’
আশিন প্রশান্তকে বললো,‘‘ প্রশান্ত টাইম দেখো। ’’
প্রশান্ত হাতঘড়িতে সময় দেখে বললো,‘‘ ম্যাম আমাদের হাতে তিন ঘণ্টা সময় আছে। ’’
আশিন উশানের দিকে তাকিয়ে ডান হাত দিয়ে চোখের কালো চশমাটা ঠেলে দিয়ে বললো,‘‘ সরি মি. উশান। উই হ্যাভ নো টাইম ফর সাচ ননসেন্স। ’’
চুপসে গেলো উশানের মুখ। রাগেরা এসে ভিড় করলো মুখমণ্ডল জুড়ে। তবে বহিঃপ্রকাশ করার সাহস পেলো না। এই মেয়েকে সে নিজেও ভয় পায়। আবার পছন্দও করে। বশে আনতে পারলে সবকিছু পুষিয়ে নেবে উশান। আবারও কিছু বলতে চাইলো উশান। তবে আশিন থামিয়ে দিলো। বললো,‘‘ ইউ নো দ্যাট, আশিন ডাজে’ন্ট ওয়েস্ট হার টাইম অন দিজ নোনসেন্স থিং।’’
কথাটুকু বলে আশিন উশানকে পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে গেলো। এই উশানকে আশিন একদমই সহ্য করতে পারে না। এই ছেলে নিজের বোনকে মেরে ফেলেছে। নৌশিন ছিলো উশানের ছোট বোন। নৌশিন উচ্ছর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলো বলে মেয়েটাকে উশান মেরে ফেলেছে। অথচ তার মায়ের পেটের বোন নৌশিন। মারতে একটুও হাত কাঁপেনি উশানের। এমনিতেই আশিন একে অপছন্দ করতো এরপর থেকে আরও বেশি অপছন্দ করে। উরফানের ছেলে না হলে একে মেরেই ফেলতো। তবে আশিন জানে না এরা ঠিক কতদিন বেঁচে থাকবে। কারণ উৎস ছেড়ে দেওয়ার মতো নয়।
সেই মিটিং চলা কক্ষটির সামনে গেলো আশিন। আশিনকে দেখে দরজার পাশিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক বডিগার্ড সালাম দিয়ে দরজা খুলে দিলেন। আশিন সেই কক্ষটির ভেতরে ঢুকলো। আর একে একে সবাই আশিনের দিকে ঘুরে তাকালো। গতকালই উরফান তাকে অফিসে আসতে বলেছিলো। তার থেকেও বয়সে বড় কিছু লোক দাঁড়িয়ে আশিনের সাথে কুশল বিনিময়ের ব্যর্থ চেষ্টা করলো। সিএমসি’র রিসার্চার ওরা। আশিন সৌজন্যমূলক হেসে হেঁটে এগিয়ে গেলো উরফান মহানের পাশের খালি চেয়ারটার দিকে। আর সেই চেয়ারটাই গিয়ে বসলো। সেসময়ই আবার কক্ষটিতে প্রবেশ করলো উশানও। উশান এসে আশিনের সামনে বরাবর বিপরীত চেয়ারটাই বসলো।
উরফান মহান আশিনকে দেখে খুশি হলেন। তিনি ভেবেছেন মেয়েটা আসবে না। তবে মেয়েটা ঠিকই আসলো। আশিন উনার পাশে বসায় আশিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।
‘‘ ভেবেছিলাম তুমি আসবে না শিমু। ’’
‘‘ এমনটা ভাবাটাই খুব স্বাভাবিক। কারণ আশিন কখনও তার টাইম এমন সব ফালতু কাজে অপচয় করে না। তবুও অনুরোধ যেহেতু করেছো তাই চলে আসলাম। ’’
উরফান মহান আশিনের মাথায় হাত রেখেই আশিনের কথাটা শুনে সবার দিকে একবার তাকালেন। আশিন চোখের চশমাটা খুলে রাখলো টেবিলের ওপর। আশিনের কথায় সবাই বেশ অবাক হয়েছে। উরফান মহান লজ্জাবোধ করলেন। আশিনের কথাগুলোতে রাগ উঠলেও সামলে নিলেন।
‘‘ আশিন, তুমি ছোট মুখে বড় বড় কথা বেশি বলো।’’
দেশের খাদ্যমন্ত্রী ওসমান দেলোয়ার কথাটা বলে উঠলেন। উনি নিজেও এই কুকর্মের সাথে জড়িত। কারণ বিভিন্ন খাদ্যের মাধ্যমেও মাদকদ্রব্য পাচারসহ আমদানী হয়। এতে উনার হাত থাকা অত্যাবশকীয়। আশিন চোখ বুজে তপ্ত শ্বাস ফেলে টেবিলের ওপর থাকা একটা কলম সরাসরি নিক্ষেপ করলো ওসমান দেলোয়ারের মাথায়। একদম কপাল বরাবর লাগলো কলমটা। আর কলমের বেগ এতটাই ছিলো যে ওসমান দেলোয়ার মৃদু আর্তনাদ করে উঠলেন। হাতের ফাঁক গলিয়েও দেখা গেলো রক্ত কালো জমাট বেঁধে খয়েরী রঙ ধারণ করেছে। গার্ডস দুজন এগিয়ে গেলো ওসমান দেলোয়ারের দিকে। গার্ডসদের হাতে বন্দুক ছিলো। একজন ওসমান দেলোয়ারের প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যস্ত তো অন্যজন আশিনের দিকে বন্দুক তাক করলো। এদিকে কক্ষে উপস্থিত থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা তাদের বৈজ্ঞানিক গবেষণা শুরু করলেন কলম ছুড়ে মারার বেগ ঠিক কতটা ছিলো? আর বাকিরা হতবম্ভ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আশিনের শান্ত স্বাভাবিক মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। উরফান মহান নিজেও অবাক হয়েছেন।
তবুও মৃদু ধমকে বললেন,‘‘ এটা কি করলে আশিন?’’
মধ্যের একটি চেয়ারে পায়ের ওপর পা তুলে এতক্ষণ যাবৎ বসে বসে আশিনকেই দেখছিলো দেশের সরাষ্ট্রমন্ত্রী তামরুল রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান। বাবার বদলে সেই এসেছে এই মিটিং এ অংশগ্রহণের জন্য। এতক্ষণ এই বুড়োদের সাথে বিরক্ত লাগলেও আশিন আসার পর আর তার ত্যাড়ামো, সাহসিকতা, নির্ভিকতা দেখার পর ইমপ্রেস হয়ে যায় তাওসিফ। আশিনের নাম শুনেছে বাবার মুখে। তবে আজই প্রথম দেখা। কিছুটা ইন্টারেস্ট একাকীই এসে যায় তখন। যেই গার্ডস আশিনের দিকে বন্দুক তাক করে রেখেছিলো তাওসিফ সবার অগোচরে গার্ডসকে বন্দুক নামাতে বলে।
এদিকে উরফান মহানের কথা শুনে আশিন কোনোরূপ ভণিতা ছাড়াই খুব শীতল আওয়াজে জবাব দেয়,‘‘ শরীরের এক-তৃতীয়াংশ শক্তি ব্যয় করে ওই ভুড়িওয়ালার মাথায় কলমটা নিক্ষেপ করেছি। তবে নিক্ষেপের গতিবেগ আর সময় কতটা ছিলো সেটা হিসেব করতে আমার যাস্ট কয়েকটা মিনিট সময় লাগবে চাচা। আমি জানি সেটা এখন পাবো না, তবে তোমায় আমি পার্সোনালি জানিয়ে দেবো।’’
উরফান দাতে দাত চেপে রাগ সংবরণ করলেন। তবে মুখে রাগের ছিটেফোঁটাও প্রকাশ করলেন না। আশিনেরই বা দোষ কোথায়? ছোটবেলা থেকেই তো আশিনকে ভয়ানক সব রিসার্চ করে ইনজেকশন দিয়ে এখন প্রায় একজন মানসিক রোগী বানিয়ে তুলেছেন তিনি। এই মেয়ে সমস্তকিছুতে পারদর্শী এর কারণ আশিনের হরমোনে এমন সব বিক্রিয়া ঘটিয়েছেন তিনি, আশিনের ছোটবেলায় এতে করে আশিন যে মনস্টার হয় নি এই ঢের ভালো। এতে আশিনের দোষ নেই উলটো উনারই দোষ। তাই চোখ বুজে একটা শ্বাস নিয়ে শান্তভাবেই বললেন,‘‘ আশিন কাজের কথায় আসা যাক। ’’
আশিন টেবিলের ওপর থাকা আরেকটি কলম হাতে নিয়ে ঘুরাতে লাগলো শুধু। উরফান মহান শুরু করলেন,“ উৎস অলরেডি আমাদের একজন সঙ্গীকে মেরে দিয়েছে। আমার মনে হয় না ও থেমে থাকবে। তাই আমার মতামত এতটুকুই উৎসকে মেরে ফেলা হোক।’’
একজন সাইন্টিস্ট ওপাশ থেকে বিরোধিতা করে বললেন,“ উৎস তো আপনার বোনের ছেলে। ’’
“ তো? ’’
লোকটি চুপ হয়ে গেলেন। আশিন এবার চেয়ার থেকে উঠে পড়ে। সবাই আবারও তাকিয়ে রয়। আশিনের মতিগতি বোঝার ব্যর্থ চেষ্টা করে। তবে আশিন গভীর জলের মাছ। তাকে ধরা কি অতোটা সহজ? তবে উরফান মহান মুখ খুলে জানার চেষ্টা করলেন,“ কোথায় যাচ্ছিস আশিন? ’’
আশিন অপরপাশে পৌঁছে চলন থামিয়ে দিলো। পিছে না তাকিয়েই জবাব দিলো,“ তোমার কথা বলা শেষ তাই চলে যাচ্ছি। ’’
উরফান মহান এবার বিরক্তিকে ‘চ’ কারান্ত শব্দ উচ্চারণ করলেন। মুখে বললেন,‘‘ আমার কথা এখনও শেষ হয় নি শিমু। অনেক কথা বলার বাকি এখনো। ’’
‘‘ তবে আমার এখানে থাকার সময় শেষ।’’ বলেই তাওসিফের চেয়ার পর্যন্ত যেতেই তাওসিফ উঠে দাঁড়িয়ে আশিনের পথ রোধ করলো। আর বললো,“কোথায় যাচ্ছো? এত ঘাড়ত্যাড়া হলে চলে না মিস।’’
আশিন কপাল কুঁচকে তাওসিফের দিকে তাকালো। পুরো মুখ পরখ করে বুঝলো এ সরাষ্ট্রমন্ত্রীর ল্যাদা বাচ্চা। বিরক্তি প্রকাশ পেলো আশিনের কণ্ঠে,‘‘ তুই এসব বলার কে?’’
আবারও সবাই একবার চমকালো। তাওসিফ চোখ ঘুরিয়ে সবাইকে দেখলো না। বরং লোলুপ দৃষ্টিতে আশিনের দিকে তাকিয়ে রইলো। আশিন সেই চাহনীর ভাষা বুঝলো। এমনিতেই উরফান মহানের কথা শুনে মাথা গরম ছিলো তারওপর এই ছেলের এমন চাহনীতে মাথা আরও গরম হয়ে গেলো। তাওসিফের কিছু বুঝে ওঠার আগেই আশিন আকস্মিক তাওসিফের গলা টিপে ধরে পা দিয়ে চেয়ারটা সড়িয়ে টেবিলের ওপর ঠেসে ধরলো। এবার সবাই ভয় পেয়ে গেলো। কিছুজন গার্ডস এগিয়ে আসলো আশিনকে থামাতে। উরফান মহান উঠে দাঁড়ালেন। বাকিরাও উঠে দাঁড়ালেন।
গার্ডস দুজন আশিনের কাছে আসতেই আশিন ধমকালো,“ কেউ আসার সাহস করলে তার মৃত্যু নিশ্চিত। ’’
মন্থন হয়ে এলো গার্ডসদের হাঁটার গতি। কে চাইবে এমন এক ভয়ানক মেয়ের হাতে মরতে? উরফান মহান ব্যতিব্যস্ত হয়ে বললেন,“ এ কি করছিস শিমু? ছেড়ে দে ওকে। কি করেছে ও?’’
পাশ থেকে কিছুজনও বলে উঠলেন,“ কি করছো কি শিমু?’’
আশিন উরফান মহানের কিংবা কারোরই কথার প্রত্যুত্তর করলো না। বরং তাওসিফের দিকে ধারালো চোখে তাকিয়ে ধারালো কণ্ঠে বললো,“ তোর কপাল ভালো আমি তোর চোখ উপড়ে ফেললাম না। একবার এমন করার সাহস করেছিস দ্বিতীয়বার নয়। কারণ আমি দেখবো না কে তুই? আমি দেখবো তোর অপরাধ কি? ’’
ছেড়ে দিলো আশিন। হনহনিয়ে চলে গেলো সেখান থেকে। গার্ডসরা তাওসিফকে এসে ধরলো। এতক্ষণ তাওসিফের শ্বাসরোধে কিছুটা সমস্যা হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া করে নি সে। এবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বুক ভরে শ্বাস নিলো।
__________________________
উৎসকে সিক্রেট মিশনে নামানো হয়েছিলো গ্রামে গঞ্জে খুন হওয়া সেই ব্যাক্তিদের খুনীকে ধরার জন্য। উৎস তো সেই কবেই খুনীর সন্ধান পেয়েছে। তবে ওপরমহলে জানায়নি। উৎস তো এখন মাঠে নেমেছে সিএমসি কোম্পানিসহ আইও কোম্পানি ধ্বংস করতে। দেশের সব রাঘববোয়ালগুলোকে শেষ করতে। এর কারণ অবশ্য এনামুল হক। উনার কথায় উৎস রীতিমতো সবাইকে টার্গেট করতে সক্ষম হলেও শেষ করতে এখনও বাকি। তবে রাসেল সরকারের মৃত্যুর খবর সেও শুনেছে।
উৎস সবে শাওয়ার নিয়ে বের হলো তখনই রুম কাঁপিয়ে তার ফোনে কল আসলো। তাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে মুছতে খাটে থাকা ফোনের দিকে এগিয়ে গেলো। ফোনের স্ক্রিনে আইজিপির নাম্বার দেখা যাচ্ছে। নিশ্চয় এসবি অফিসে যাওয়ার জন্য কল করেছে। কিন্তু উৎস এখন যেতে পারবে না। কারণ সে গাজীপুর রয়েছে।
উৎস নিহালকে কল করে জানিয়ে দিলো চৌরাস্তার মোড়ে আসতে। নিহালও রাজী হলো। চৌরাস্তা থেকে সোজা ‘সিএমসি’ এর একজন বিজ্ঞানী ফেড্রিকের বাড়িতে যাবে ঢাকা গুলিস্তানে। বাসা থেকে বেরিয়ে নিচে এলো উৎস। বাইকে বসে স্টার্ট দিলো, তবে বাইক স্টার্ট হলো না। উৎস আবারও চেষ্টা করলো কিন্তু স্টার্ট হলো না।
এদিকে উৎসর থেকে কিছুটা দূরে একজন কালো মুখোশধারী লোককে দেখা গেলো রাইফেল হাতে। খুবই সতর্কতার সহিত উৎসর দিকে তাক করে শ্যুট করলো।
কেউ শুনলো না আর না কেউ টের পর্যন্ত পেলো। নিস্তব্ধতা যেন জেকে বসেছে পুরো জায়গায়। শুধুই বোঝা গেলো কেউ একজন আজ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।
চলবে,…