বিচ্ছেদ

দোতালা বাড়িটা সাদা মরিচ বাতি দিয়ে সাজানো। সাদা কেনো? সাদা যে উনার ভীষণ প্রিয়। বিয়ের গেটটা কি সুন্দর দেখাচ্ছে! অপূর্ব সাজবাতি! 

ইশশ… আমার চোখে এত বিঁধছে কেনো আলো গুলো? কেন মনে হচ্ছে ছোট্ট ছোট্ট মরিচ বাতি বিদ্রুপ করে হাসছে এই জন্ম দু:খিনীর দিকে চেয়ে। 

রেলিংবিহীন খোলা ছাদে হলুদের স্টেজ। গাঁদা ফুলের গন্ধ এখান থেকেও স্পষ্ট। সবার কি একটা উত্তেজনা, আনন্দ। চারিদিকে রংমহলের খেলায় আমি এমন ফিকে হয়ে দাড়িয়ে আছি কেনো? ভালবাসার মানুষের ভালো থাকাটাই তো সবচেয়ে প্রিয় হওয়া উচিত। আমি এতো স্বার্থপর কেনো? ভালোবাসলে কি সবাই স্বার্থপর হয়ে যায়? নাকি হওয়া উচিত?

বারান্দা থেকে চলে এলাম। ফ্লোরে বসে হাঁটুতে মাথা চেপে বসে রইলাম বেশ কিছুক্ষণ। সাউন্ড স্পিকারের শব্দ শোনা যাচ্ছে। গানবাজনা হচ্ছে! প্রিয় মানুষটার অন্যের হয়ে যাওয়ার উৎসব! 

হাঁটুর কাপড়টা ভিজে গেছে। দেখবোনা দেখবোনা করেও উঠে দাড়ালাম। বারান্দা থেকে খুব কাছাকাছি উনাদের ছাদটা। আমি গেলে যে কেও দেখে ফেলবে। তখন ছাদ খালি ছিলো। এখনতো নিশ্চয় মানুষে ভরপুর।

দরজা খুলে বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের বাসার পরিস্থিতি নিত্যদিনের মতোই। মা টিভি দেখছে। দাদুর ঘরে উঁকি দিয়ে দেখলাম ঘুমাচ্ছে। বাবা বাসায় নেই। যৌথ পরিবার আমরা। চাচারা দোতালায় থাকেন। ল্যান্ডফোনের পাশে সোনালী রংয়ের বিয়ের কার্ডটা রাখা। প্রতিবেশি হিসেবে দেয়া হয়েছে। দাওয়াত রক্ষা করতে হয়তো বাবা- চাচারা যাবে কাল। সবার ঘটা করে যাওয়ার মতো আত্মীয় তো নন উনারা।

আমি মাথায় ওড়না টেনে নিলাম। রান্নাঘর থেকে দুপুরের মাছের কাঁটা জমানো বাটিটা নিয়ে আসলাম। 

গলা ঝেড়ে স্বাভাবিক করলাম। বললাম,

—“ছাদের বিড়ালটাকে কাঁটাগুলো দিয়ে আসি মা। জোরে জোরে চিল্লাচ্ছে। দুপুরে তো আসেনি। কাঁটাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। পরে আর খেতে পারবেনা।”

মা তাকালো।। জানালা দিয়ে বাইরেটা দেখে বললো,”রাত হয়ে গেছে তো। একা একা যাবি? বোনকে নিয়ে যা।”

আমি দরজা খুলতে খুলতে বললাম,”না থাক, ও ঘুমাচ্ছে বোধহয়। আমি একাই দিয়ে আসি। বেশিক্ষণ লাগবেনা।”

আমি চলে আসলাম। মা পিছু ডাকেনি। জানে আমি শুনবোনা। 

সাদা বিড়ালটা আসলেই ট্যাংকির সামনে শুয়ে আছে। আমি ডেকে খাবার দিলাম। বিড়ালটা খাচ্ছে। 

উনাদের ওখানে জোরে গান বাজছে। হিন্দি গান! বাড়ির একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা!

আমি বিষাক্ত একটা শ্বাস ছাড়লাম। কষ্টগুলো কি বাতাসে ছড়িয়ে গেলো? বাতাসটাও কি বিষাক্ত হয়ে উঠলো? হ্যাঁ মনেহয়, শ্বাস নিতে পারছি না তো।

গুটি গুটি পায়ে রেলিংয়ে হাত রেখে দাড়ালাম। কি যেনো চাপাতি দিয়ে কুঁচি কুঁচি করে ফেললো হৃদপিন্ডটা। ভালবাসা নাকি? আহ্! সহ্য হচ্ছেনা কেনো? 

ওইতো আহসান বসে আছেন স্টেজে। খালি গা। রোমশ বুক। চওড়া কাঁধ। ফর্সা দেহে সাদা ধুতিটা কি দারুন মানিয়েছে! ইশশ…লোকটা এতো সুন্দর কেনো? গালে, গলায় হলুদ মাখানো। কি সুন্দর করে হাসছেন উনি। 

এতো সুন্দর হাসিটা। এত সুন্দর! সব ভুলিয়ে দেয় যেন। তিনতলার ছাদে দাড়িয়ে আছি। অন্ধকার বলে কেউ দেখতে পারবেনা। তাছাড়া এদিকে তাকানোর সময় কই কারো?

কে যেনো দুষ্টুমি করে সাড়া বুকে হলুদ মাখিয়ে দিলো। সেই বুকটা! ইশশিরে…একবার যদি মাথা রাখতে পারতাম। একটু যদি ছুঁয়ে দিতে পারতাম। এ জন্মে হলোনা আর। আহসান নিচের ঠোঁট কামড়ে হাত দিয়ে মারার ভঙ্গি করলো। আমি হেসে ফেললাম। চোখে পানি মুখে হাসি। আমাকে কি অদ্ভুত দেখাচ্ছে?

পেছন থেকে কে যেনো কাঁধে হাত রাখলো। পিলে চমকে উঠলো। কে আছে পিছে? কান্না লুকাবো কি করে? অন্ধকারে কি দেখা যাবে চোখ? ও আল্লাহ! জান যেনো হাতে চলে এসেছে।

আপুর গলা শোনা গেলো,”কাঁদলে ভালো করে কাঁদ। ভালোওবাসলি লুকিয়ে লুকিয়ে। কাঁদবিও লুকিয়ে লুকিয়ে। এতো লুকোচুরি কবে শিখলি রে?”

আমি হাঁফ ছাড়লাম। কলিজায় পানি এলো। চোখ মোছার চেষ্টা করলাম। মুছলো আর কই? আবার ভিজে গেলো সব। 

আপু পাশাপাশি দাড়ালো। আমি দাঁতে দাঁত চেপে ধরলাম। বেহায়া চোখ আহসানের দিকে। 

—“সুন্দর লাগছে তাইনা?”

আমি কেমন নির্বোধের মতো উওর দিলাম,

—“খুব সুন্দর লাগছে। কেও একটু কানের পাশে কাজল দিয়ে দিচ্ছেনা কেনো আপু? নজর লেগে যাবে তো।”

আপু হাসলো। আমি কাঁদলাম। যত কান্না এই ভালবাসাতেই। কেউ যদি বলতো,”তুমি যদি কখনো সময় পিছিয়ে নিতে পারো তবে কোন সময়টায় নিবে?” আমি একবাক্য উওর দিতাম,”যেদিন থেকে উনাকে ভালবাসি ঠি ক ততদিন পিছিয়ে দিন।” আমি আর ভালোবাসতে চাইনা। একদম চাইনা। আবার খুব করে চাই বোধহয়?

আপু হাত টেনে ধরলো,”নিচে চল মা ডাকছে।”

আমি হু হু করে বললাম,

—“আর একটু দেখি আপু। আর একটুখানি দেখি। কাল থেকে দেখবোনা তো। সত্যি বলছি আর দেখবোনা।”

আপু অদ্ভুত স্বরে বললো,

—“না দেখে থাকতে পারবি?”

আমি একপলক তাকালাম। মূহুর্তেই হেঁচকি তুলে বললাম,

—“উনাকে না দেখলে আমি কিভাবে বাঁচবো আপু? এও সম্ভব? আমি মরে যাইনা কেনো? আল্লাহ আমাকে নেয়না কেনো?”

আপু চেতে গেলো। থাপ্পড় মারার জন্য হাত উঠিয়েও আমাকে দু’হাতে বুকে টেনে নিলো।

—“কেন এত পাগল তুই? এতো ভালো কেনো বাসতে হলো তোর?”

আমি উওর দিতে পারলামনা। ব্যাথায় ব্যাথায় কন্ঠ আটকে গেছে। কুঁচি কুঁচি করা হৃদপিন্ডটায় ওই হাসিটা বোধহয় লবণ মাখাচ্ছে। কাতরে কাতরে মরে যাচ্ছি। এতো যন্ত্রনা!

আপু চোখমুখ মুছিয়ে দিলো। জোর করে বললো,”চল, নিচে চল। আর দেখা লাগবেনা।”

আমি নেমে আসলাম। আসার আগে উনার সেই হাসিমাখা চেহারাটা মনে গেঁথে আনলাম। হইনা এবার উনার খুশিতে আমিও খুশি। উনাকে না পেয়েও?

_____________

ঘড়িতে এগারোটা…

গানের আওয়াজ এখনো চলছে। এদিকে মাথাব্যাথায় শিরা- উপশিরা ফাঁটছে আমার। মাথায় যেনো উল্টোপাল্টা কি সব ঘুরছে। কি কি যেন দেখলাম ঘোরের মাঝে। বুঝতে পারছিনা। বিছানা ছেড়ে উঠে গেলাম। বারান্দার দিকে পা বাড়াতেই আপু ঠান্ডা গলায় বললো,

—“আবার যাচ্ছিস কেনো?”

আমি দাড়িয়ে গেলাম। ঘর অন্ধকার। আপু পাশে ছিলো? বুঝিনি। 

আমি সেখানে দাড়িয়েই আবার কাঁদলাম। আপু উঠে আসলো। মুখের চুল সরিয়ে দিলো। আমি অসহায়ের মতো বলেই ফেললাম,”একবার যাইনা আপু। উনাকে একটু জড়িয়ে ধরি গিয়ে। শক্ত করে শুধু একবার। কি হবে? বাবা মেরে ফেলবে আমাকে? বেঁচে থেকেও কি? আমিতো মরেই গেছি।”

আপু এবার রাগলো না। গালে হাত রেখে বললো,”সত্যি যাবি?”

আমি উপরনিচে মাথা নাড়লাম। মনে হলো, খুব ভারি একটা পাথর নেমে গেলো বুক থেকে। শান্তি লাগলো। অনেক শান্তি।

বাসা থেকে নামলেই উনাদের বাসা। তিনকদম পেরোলেই বিয়ের গেট। রাস্তা আলোকিত। বাইরে মানুষ আছে। 

চোখ ফাঁকি দিয়ে যাওয়া অসম্ভব। রাতের খাবার খেলাম কোনোমতে। আপু আশ্বাস দিয়েছে নিয়ে যাবে। সবাই ঘুমিয়ে পড়লো বারোটার দিকে। উনাদের গানবাজনা একটু নিভেছে। বারোটা দশের দিকে আপু আমাকে নিয়ে বেরোলো। বারান্দা দিয়ে দেখেছে আহসান ছাদে নেই। জানালা দিয়ে তাকালেই উনার রুম দেখা যায়। রুমের বাতি জালানো ছিলো। পর্দা টানা।

সিঁড়ি বেয়ে নামতে গিয়েও উত্তেজনায় কাঁপছে হাত- পা। মানুষটার সামনাসামনি দাড়ালে আমার জ্ঞান থাকবে তো? ভুলবশত উনার চোখে কখনো চোখ পড়লেই তো মরে যাই যাই অবস্থা হয় আমার। তার সাথে আমি কথা বলবো কি করে?

আমাদের নিজের বাড়ি। গেট খোলা নিয়ে সমস্যা হলোনা। চাবি ছিলো সাথে।

আমি বললাম,

—“আপু? কেউ দেখে ফেললে? থাক, চলো ফিরে যাই।”

—“ভালোবেসে এতো ভয় পেলে চলেনা চৈতি।”

আমি চুপ হলাম। অপেক্ষা করলাম। গেটের সামনে একেবারে খালি হলেই ভেতরে ঢুকবো। মনের কাঁপাকাঁপি বন্ধ হলোনা। জীবনে প্রথমবারের মতো ভাগ্য সহায় হলো। লোডশেডিং হলো পুরো এলাকায়। কিছু বুঝার আগেই আপু ছুট লাগালো আমার হাত ধরে। আমি কাঁপছি। খুব কাঁপছি। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। ও বাড়ির গেট খোলাই ছিলো। লোকজন আসছে যাচ্ছে। এর আগে কখনো আসিনি। অন্ধকারেই আপু কিভাবে যেনো দোতালায় নিয়ে গেলো। বাসা অনেকটাই খালি। সবাই ছাদে। কখনো না আসলেও আহসানের রুম চিনতে কষ্ট হলোনা। আপু দেরি করলোনা। দরজা ঠেলে ঢুকে গেলো ভেতরে। দরজা কেনো খোলা ছিলো কে জানে? 

আমরা ঢুকতেই সেই চিরচেনা কন্ঠস্বর,”আম্মা? গোসলের পানি এনেছো? আচ্ছা দাড়াও। ফোনটা যে কই? লাইট জ্বালাই। আবার গায়ে ফেলে দিওনা। গরম পানি কিন্তু।”

উনি ফোন খোঁজার আগেই কারেন্ট চলে এলো। আলোতে মায়ের বদলে আমাদের দেখে উনি যেনো ভুত দেখার মতো চমকে গেলেন। থমকে গেলাম আমিও। কাছ থেকে লোকটা এত সুন্দর? আমি হাত বাড়ালেই তাকে ছুঁতে পারবো? সত্যি? আপু দরজার ছিটকিনি আটকে দিলো। বললো,”আমি বারান্দায় আছি।”

আহসান যেনো কিছু বলতে পারছেন না। শব্দ ফুরিয়ে গেছে। আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে আবার। উনার মায়ের ডাক শোনা গেলো,”দরজা খোল। পানি এনেছি। আর কতক্ষণ হলুদ গায়ে থাকবি? জলদি খোল।”

আমি ফুঁপিয়ে উঠলাম। উনি বাহু ধরে দরজার সামনে থেকে নিয়ে আসলেন আমাকে। লোকটার স্পর্শ। সত্যি তো? একদম সত্যি?

উনি গলা বাড়িয়ে বললেন,”লাগবেনা আম্মা। তুমি যাও। আমি ঠান্ডা পানি দিয়েই গোসল করবো।”

—“সে কি জ্বর আসবে তো।”

—“আসবেনা, যাও তুমি।” একরোখা কন্ঠে উনার আম্মা বিরবির করতে করতে চলে গেলেন। উনি বাহু ছেড়ে দিলেন। আমি আর পারলামনা। দিন দুনিয়ায় সকল বারণ তুচ্ছ করে ঝাপিয়ে পড়লাম উনার হলুদমাখা বুকে। দু’হাতে জাপটে ধরলাম পিঠ। উনি স্হির হয়ে দাড়িয়ে রইলেন। কাঁদতে কাঁদতে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে আমার। একটুপর বুঝলাম, আমার মাথার পিছে একটা হাত। আমার যেনো মনে হলো সব পেয়ে গেছি। পৃথিবীতে আর কিছু চাওয়ায় বাকি নেই। সব পেয়ে গেছি আমি। সব।

—“কেনো আসলে চৈতি?”

আমি কথা বলতে পারলামনা। উনার গলায় আমার নামটা কেমন অপরুপ শোনালো না? এত সুন্দর আমার নামটা?

চোখেমুখে হলুদ মেখে একাকার। উনার গায়ের হলুদ। উনার বুকের হলুদ। বিশ্বাস হচ্ছেনা, এই বুকে আমি মাথা রাখতে পারলাম? সপ্ন নয়তো? ভেঙে যাবে এক্ষুণি?

আহসান কেনো যেনো একটা চুমু খেলেন আমার মাথায়। ছোট্ট একটা চুমু। কয়েক সেকেন্ড হয়তো। এতেই যেনো সব পুড়ে গেলো। ছারখার হলো। আগুন ধরলো আগে থেকেই দগ্ধ হওয়া হৃদয়ে। এতো কষ্ট! এতো যন্ত্রনা! এমন বিচ্ছেদ!

আমি শেষপর্যন্ত কথা বলতেই পারলামনা। আহসান ছাড়িয়ে নিলেন নিজের থেকে। আপুকে ডেকে বললেন,”কেন নিয়ে এলে ওকে?”

আমি তখনো কাঁদছি। আপু বললো,”ও মারাই যেতো।”

উনি শ্বাস ফেললেন। বললেন,”ফিরবে কিভাবে? আচ্ছা দাড়াও, আমি দেখে আসি বাইরেটা।”

আহসান কিভাবে যেনো সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে আমাদের বাসার নিচে নিয়ে আসলেন। আপুকে বললেন,”ওর খেয়াল রেখো।”

আমি তাকালাম উনার চোখে। উনি চোখ নামিয়ে শুধু বললেন,”সম্ভব না।”

সেটাই শেষ কথা। উনি চলে গেলেন। আমি এসে আয়নার সামনে দাড়িয়ে রইলাম অনেকক্ষণ। ইশশ.. উনার গায়ের হলুদ। না ধুলে হয়না?

পরের দিন নিয়মমতো বিয়ে হয়ে গেলো। আমরা কেউই যাইনি। মেঝোচাচা আর বাবা গিয়েছিলেন শুধু।

রাতের বেলা বারান্দায় দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমি শুধু দেখলাম একটা লাল টুকটুকে বউ নিয়ে এসেছেন উনি। সবাই কি খুশি! আহা! মেয়েটা কান্না করেছে। আমি এতো কেঁদেও উনাকে পেলামনা আর এই মেয়েটা পেয়েও কাঁদছে। বোকা!

সেদিনের পর কেটে গেলো সময়। দেড় বছরের মাথায় আমার বিয়ে হয়ে গেলো। সংসার হলো একটা। 

পৃথিবীর অন্তরালে হারিয়ে গেলো এক মেয়ের পাগলাটে ভালোবাসা।

জানালায় দাড়িয়ে দাড়িয়ে উনাদের বাড়ির দিকে তাকিয়েই পুরনো কথা ভাবছিলাম। বাড়িটা এখনো দোতালাই আছে। ছাদে কাপড় শুকানো। জামাইসহ বেড়াতে এসেছি। বিয়ের পর প্রথম। আপুও এসেছে। আপুর বিয়ে হয়েছিলো আমার বিয়ের ছ’মাস আগেই। 

হঠাৎ উনার জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিলো কেউ। উনার বউ। কোলে একটা লাল ফ্রক পড়া টুকটুকে মেয়ে। আমি আপুকে ডাকলাম। আপু পাশে এসে দাড়ালো। আমি চোখ দিয়ে ইশারা করে বললাম,

—“দেখ, উনার একটা মেয়ে হয়েছে।”

কন্ঠটা একটু কেঁপে গেলো বোধহয়। একটু? নাকি অনেকটা?

সমাপ্ত

  • মালিহা খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *