রবিন সাহেবের শরীরের অসুস্থতা এখন কিছুটা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমেছে।আশিন বাবার জন্য সমস্ত কাজ সেড়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। আজকাল তার বাবাকে বাড়িতে একা রেখে যেতেও ভয় পায়।তাদের বাড়ি থেকে কয়েক কদম হেটে গেলেই রূপালীদের বাড়ি।রূপালিরাই মূলত এখানে তাদের প্রতিবেশী।রূপালি মেয়েটা সবে ক্লাস নাইনে পড়ছে।মেয়েটার বাবার বাজারে একটা দোকান আছে।রূপালির মা আশিনকে বেশ সমীহ করেন। রূপালি মেয়েটাও আশিনের ভক্ত বললেই চলে।এই দেড়মাসে বেশ ভালো পরিচয় হয়েছে তাদের মাঝে। প্রতি শুক্রবারে রূপালি আশিনদের বাড়িতে গিয়ে আশিনের সাথে খোশ-গল্পে মেতে থাকে।আশিনের মতো হতে চাওয়ার অভিপ্রায় তো চোখে পড়ার মতো।রূপালিদের বাড়ির সামনে গিয়ে আশিন ‘রূপালি’ বলে ডাকতেই ভেতর থেকে রূপালির মা বেরিয়ে এসে আশিনকে দেখে হেসে শুধায়,“ রূপালি তো ইস্কুলে গেছে আশিন মা।তা কি দরকার নাকি?”
আশিন ইতস্ততবোধ করে।সাধারণত আশিন তার বাবাকে একটু দেখে রাখার কথা বলার জন্য এসেছে।জানে না সে এ কথাটা ঠিক কিভাবে নেবে রূপালির মা।রূপালি থাকলে ভালো হতো।আশিনও ভুলে গিয়েছিলো রূপালি এ সময় স্কুলে থাকে।আশিন তবুও ইতস্ততভাবেই বলে,“ আসলে আন্টি, আমি এখন হাসপাতালে যাচ্ছি।বেশিকিছু নয় শুধু দুএকবার আমাদের বাড়িতে নজর দিলেই হতো শুধু। বাবার জন্য চিন্তা হয়।”
রূপালির মা খোশমেজাজেই বলেন,“ তুমি হাসপাতালে যাও মা।রূপালি আইলে রূপালিরে কমু নি আমি।”
আশিন কৃতজ্ঞতার হাসি হাসে।রূপালির মা-কে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হাটা ধরে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। আবহাওয়া শীতল।মিষ্টি রোদ্দুর মেঘের আড়াল হতে হালকা পাতলা উঁকি দিচ্ছে।ছোট্ট একটা পুকুর আছে রাস্তার ধারে।এলাকার বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলো এখানে গোসল করে।দু একবার দেখেছে আশিন।তারও সে ছেলেবেলায় হারিয়ে যেতে মন চাই তখন।তবে সব চাওয়া কি আর পূরণ হয়।আজ ভাবনাগুলো বড্ড অগোছালো লাগছে তার।আরেকটু সামনে যেতেই উৎসদের জিপগাড়িটা দাঁড় করানো দেখে আশিন। উৎসের বন্ধুগুলো গাড়িতে বসে আছে।এরা কি এখন এই রাস্তায় থাকে নাকি?এগিয়ে যায় আশিন।পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় পেছন থেকে নরম গলায় বলে,“ ড. আপা আমাগো ভাই অসুস্থ।”
কথাটা রিশাত বলেছে।মূলত এদের বন্ধুদের মধ্যে এই ছেলেটা আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে।ছেলেটা উৎসদের থেকে জুনিয়র।তবে সারাদিন তাদের সাথেই থাকে।আশিন জানে এরা বিরক্তি করার জন্যই এখানে এসেছে।এখন কথার জবাব দেওয়া মানেই অহেতুক ঝামেলায় জড়ানো।তাই চুপচাপ আবারও হাটতে থাকে।বাধ সাজে তখন যখন পেছন থেকে আবারও কেউ তাচ্ছিল্য করে বলে,“ আপনি নাকি ড.। রোগী চিকিৎসা করা কিন্তু আপনার দায়িত্ব।এভাবে এড়িয়ে চলা নয়।”
পায়ের চলন্ত কদম মুহুর্তেই থেমে যায়।কথাটা বলা নিহালের মুখেও হাসি ফোটে।উৎস আকাশের দিকে মুখ করে আয়েশে বসে আছে গাড়ির ফ্রন্ট সিটে। আশিন পেছন ফিরে তাকাতেই দাত কেলিয়ে হাসে সবাই।উৎস আর এই ছেলেগুলোকে নাকি গ্রামের কলেজপড়ুয়া স্কুলপড়ুয়া মেয়েরা পছন্দ করে। মেয়েদের রুচি আজকাল এতটাই নিচে গিয়ে পড়েছে যে এমন বখাটেদের পছন্দ করে।একজন বাদে সবারই পোশাকের অবস্থা বেগতিক,গুণ্ডা টাইপের। আশিন ভাবনা মাড়িয়ে জবাব দেয়,“ কে এবং কি এমন অসুস্থ যে মাঝরাস্তায় আমার যাওয়ার ব্যাঘাত ঘটালেন আপনারা।”
বিশাল বলে,“ উৎস অসুস্থ।সারারাত জ্বর। আগামীকালকে ওর বোনের বিয়ে।তো এমন অসুস্থতা নিয়ে বিয়েতে কিভাবে এনজয় করবে?”
উৎসের এই বন্ধুগুলো সবাই শিক্ষিত।তবে অলস প্রজাতির হওয়ায় কাজকর্ম না করে সারাদিন এদিকে সেদিকে ঘুরিয়ে বেড়ায়। বখাটের ন্যায় গালাগালিও করে বলে শুনেছে আশিন।আবার অনেক সময় মেয়েদেরও উত্তেজিত করেছে।তবে খারাপ কিছু শোনা যায় নি কখনো।
বিশালের কথার পরিপ্রেক্ষিতে আশিন জবাব দেয়,“ অসুস্থ যেহেতু বাড়িতে না থেকে এই রাস্তায় রাস্তায় কেন?তাও আবার এমন সময়ে?”
“ এই রাস্তাটা সুন্দর।এই জায়গার সকালের হাওয়াটা ভালো লাগে উৎসের।তাই তো এখানে আসে।যাতে একটু ভালো অনুভব করে।”
রাস্তার পাশে কিছু সারি সারি নারকেল গাছ রয়েছে। কথাটা মন্দ নয় মোটেও।আশিন জিজ্ঞাসা করে,“ কি অসুখ হয়েছে এত বড় দামড়া ছেলের?”
“ জ্বর উঠেছে।”
“ নাপা এক্সট্রা খেলেই ঠিক হয়ে যাবে।” কথাটা বলেই চলে যেতে উদ্যত হয় আশিন।এদিকে সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।উৎসেরও একই অবস্থা। মেয়েটার সাথে একটু ঝগড়া করার জন্য প্ল্যান করছিলো।শাওনের দিকে তাকাতেই তাড়াতাড়ি আশিনের উদ্দেশ্যে বলে,
“ ড. আশিন!শুধুই কি নাপা এক্সট্রা?”
আশিন যেতে যেতেই বলে,“ পারলে দোকান থেকে ইদুর মারার ঔষুধ কিনে খেতে বলবেন।জ্বর পালাবে না শুধু একদম দৌঁড়াবে।”
কথাটা শুনে বাকিরা হেসে দেয়।উৎস ভুরু দুটো কুঁচকে তাকিয়ে থাকে আশিনের যাওয়ার দিকে। মেয়েটার এমন কথাবার্তা দিনে সে একবার হলেও শুনতে চায় হিসেবে ঠিক করে।তখনই হন্তদন্ত পায়ে এক ছেলে আসে তাদের কাছে।হাপাতে হাপাতে বলে,“ উৎস ভাই,নদীর কিনারায় আরেকটা লাশ পাইছে।তুমি তাড়াতাড়ি আহো।”
কথাটা শুনে উৎস চিন্তিত হয়ে পড়ে।হচ্ছে-টা কি আজকাল।নিহালের দিকে একবার তাকায়। নিহালও তার দিকে তাকায়।তার চোখদুটোও চিন্তান্বিত। শান্তিপুর গ্রামের সুনাম আছে চারিদিকে।তবে এমন চলতে থাকলে গ্রামের মানুষজনও থাকতে ভয় পাবে পরে।গাড়ি চালিয়ে রওনা হয় লাশগুলো দেখার জন্য।মিনিট দশেকের মাঝে সে জায়গায় পৌঁছাতেই প্রথমে চোখ যায় অশোক তালুকদারের দিকে। বাবাকে দেখে উৎস কিছুটা বিচলিত হয়।একই বাড়িতে থাকলেও খুব একটা দেখা হয় না তাদের। একদিন ধরে তো একেবারেই না।মেয়ের বিয়ের কাজে তদারকি করতেই অশোক তালুকদারের সময় চলে যায়।এদিকে উৎসও যেচে বাবার সাথে কথা বলতে নেহাৎই ভণিতা করে সবসময়।দিন যত যাচ্ছে বাবা ছেলের সম্পর্কে ফাটল ব্যতীত অন্যকিছু ধরছে না।জং ধরারা উপক্রমও বাড়ছে।মহামারী চলছে বাবা ছেলের মাঝে।কাটিয়ে উঠতে সময় অনেক লেগে যাবে।
রূপক পর্যবেক্ষণ করছে লাশগুলো।আগের লাশগুলোর মতোই মুখাবস্থা সম্পূর্ণ বিকৃত।একজন সাধারণ মানুষের দেখা সম্ভব নয়।এইযে লোকজন একটু দেখেই ফিরে যাচ্ছে কানাঘুষা করে করে। কথাতেই আতঙ্ক স্পষ্ট তাদের।কণ্ঠনালীও হয়তো বার বার কেঁপে উঠছে।উৎস এগিয়ে গিয়ে লাশগুলো দেখে।পঁচা গন্ধ বের হচ্ছে।অশোক তালুকদার ছেলেকে দেখে এগিয়ে যান ছেলের দিকে।পাশে গিয়ে দাঁড়ান ছেলের।বাবার উপস্থিতি বুঝতে পেরে একটু সড়ে এসে রূপককে বলে,“ আবার!”
ছেলের এড়িয়ে চলাটা স্পষ্টতর ভাবে বুঝতে পারেন অশোক।সড়ে আসেন তিনিও।পুলিশ অফিসারের সাথে কথা বলা শুরু করেন।রূপক ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলো কিছু ক্লু পাওয়া যায় কিনা।খুনের উপদ্রব বেড়ে যাচ্ছে এলাকায়।এটার শেষটা রূপকই বের করবে।উৎসের কথা কানে বাজতেই বলে,“ নদীর জলে ভেঁসে উঠেছিলো।স্থানীয়রা দেখে খবর জানিয়েছে।”
“ কি মনে হচ্ছে?”
“ আগের লাশগুলোর মতোই অবস্থা।পঁচা গন্ধ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে অনেকদিন আগেই মার্ডারড।তবে লোকগুলো কি এই গ্রামের নাকি অন্য গ্রামের বোঝার অবকাশ নেই।”
“ শুধু কি এই একটাই?”
উৎসের কথা শুনে ঘাড় কাত করে পেছনে ফিরে উৎসের দিকে তাকায় রূপক।হেসে বলে,“ আপাতত এই একটাই।তবে সন্দেহ আরও পাওয়া যায় কিনা।”
লাশটির দিকে চোখ স্থির রেখে উৎস প্রশ্ন করে,“ কি মনে হয়,খুনি কি এই গ্রামেরই নাকি অন্য গ্রামের।”
উৎসের লাশের দিকে তাকানো দৃষ্টির দিকে রূপক তাকিয়ে বলে,“ বিষয়টা খুবই ভাবাপন্ন।খুনি যে কেউ হতে পারে। হয়তোবা আমাদের আশেপাশেও থাকতে পারে।”
রূপকের দৃষ্টি তীর্যক।উৎসের লাশের দিকে তাকানো দৃষ্টিও অনড়।দুজনের কথাবার্তা নিহাল শুনে যায় শুধু।পাশে দাঁড়ানো আহাম্মকগুলো শুধু ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
___
আশিনের কেবিনে অপেক্ষারত অবস্থায় অনেক্ষণ হলো বসে আছে রূপক আর তৌশিক।রূপক অনেকবার বলেছে সেও পোস্টমর্টেমের সময় থাকতে চায়।তবে আশিন না করে দিয়েছে।এটা মোটেও পছন্দ হয়নি রূপকের।তর্কাতর্কি করতেই যাচ্ছিলো গ্রামের পুলিশের ওসি এসে বলে সে থাকবে।তাই আর কিছু বলেনি রূপক।তবে তার সেখানে থাকার প্রয়াস ছিলো অগাধ।এরই মাঝে হাতে কিছু রিপোর্টস নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে আশিন।আশিনকে দেখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চায় রূপক।আশিন সেই দৃষ্টি দেখে শান্ত কন্ঠে বলে,“ তীক্ষ্ণ চাহনী দ্বারা কি বোঝাতে চান?আপনি আমায় কতটা অপছন্দ করেন?”
রিপোর্টসগুলো তৌশিকের হাতে তুলে দিয়ে নিজের জন্য বরাদ্দ চেয়ারে গিয়ে বসে আশিন।রূপক আশিনের কথায় উত্তর দিতে চেয়েও দেয় না। রিপোর্টসগুলো হাতে নিয়ে ভালোভাবে দেখে।তবে ফলাফল সেই আগের মতোই।বিষাক্ত কিছুর কারণে মৃত্যু ঘটেছে।তবে আজকের রিপোর্টসে নিচে কিছু ভিন্নতা পরিলক্ষিত।মারা যাওয়ার পর বেধরম পেটানো হয়েছে বৃদ্ধগুলোকে।বৃদ্ধটি মারা গিয়েছেন ছয়দিন আগে।রূপক ভাবুক হয়ে যায়।রিপোর্টস গুলো হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে চলে যায়।তবে দরজার কাছে গিয়ে বলে,“ ড. আশিন আপনি ঠিকই ধরেছেন।আমি আপনাকে খুবই অপছন্দ করি।সাবধানে থাকবেন।আমার শ্যুট কিন্তু একটাও মিস যায় না।”
আশিন হেসে ওঠে।তৌশিক শুধু দাঁড়িয়ে দেখছে তাদের।তার স্যার এভাবে কাউকে হুমকি দেয় না। আশিনও বিদ্রুপ করে বলে,“ হুমকি দিচ্ছেন আমাকে?”
রূপকও হাসে।পেছনে ফিরে আশিনের চোখের দিকে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে,“ ধরে নিন তাই।”
“ আমি আশিন।এসব বাচ্চা বাচ্চা হুমকি দিয়ে আমায় ভয় দেখানো নিছকই বাচ্চামো।বরঞ্চ আপনি সাবধানে থাকবেন, বলা তো যায় না কখন কিভাবে মৃত্যু আসে।”
আশিনের শেষোক্ত বাক্যে মিশে রয়েছে আলাদা উদগীরণ।যেটা রূপক আন্দাজ করতে পেরেছে।এক মুহুর্তও না দাঁড়িয়ে চলে যায়।আশিন সময় দেখে কত বাজে? দশটা বেজে গেছে।বাড়িতে তার বাবা একা আছে।বৃদ্ধ বাবার জন্য চিন্তার অন্ত নেই তার।গায়ে জড়ানো এপ্রোন খুলে রাখে।ব্যাগ আর মোবাইল হাতে নিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়।হাসপাতালের বাইরে এসে তার বাবাকে আজ খুব মিস করে। রবিন সাহেবের অবস্থার উন্নতি হলেও আশিন মানা করে দিয়েছে তার যদি দেরি হয় তবে না যেতে।সে একাই বাড়িতে যেতে পারবে।তার বাবা নাকোচ করলেও পরে আশিনের অনেক জোরাজুরিতে রাজি হয়।তবে আশিনে খন তার বাবাকে প্রচণ্ড মিস করছে।শীতের হাওয়াটা গা ছুয়ে যেতেই কেমন যেন করে ওঠে মন। হাটা শুরু করে।গ্রামাঞ্চল রাস্তায় রাস্তায় সোডিয়ামের আলো নেই।তবে পূর্ণিমা রাতের চাঁদের আলো বিরাজমান।ঘনকালো দুটো মেঘের ফাঁক দিয়ে চাঁদের আলো ভূপতিত হচ্ছে।আশপাশ পরিষ্কার দৃশ্যমান।রাস্তাটা প্রস্থে বেশ বড়।গাড়ি চলাচল করে এই রাস্তায়।তবে রাত হওয়ায় এখন নিস্তব্ধ। জনমানবহীন রাস্তায় চলাচলে একাকী চলাচলে কিছুটা ভয় করেই।দূর হতে শুধু বাড়িঘরগুলো থেকে আলোর ছটা ভেসে আসছে।রাস্তার পাশের ঝোপঝাড় থেকে ঝিঁ ঝিঁ পোকার আওয়াজ প্রখর। হঠাৎ ভারি কিছুর শব্দ হয়।রাস্তার পাশে বৃহৎ আকৃতির কিছু গাছ আছে।তারই পেছন থেকে সেই আওয়াজ নিঃসৃত হয়েছে।আশিন জোরে হাটা শুরু করে।এরই মাঝে কালো কাপড়ে মুখোশধারী কেউ আশিনের সামনে এসে দাঁড়ায়।চাঁদের আলো লোকটির কালো কাপড়ে মোড়ানো মুখায়বে এসে ছিটকে পড়ছে।আশিন বিভ্রান্ত হলেও নিজেকে যথেষ্ট শান্ত রাখে।লোকটির হাতে ধারালো অস্ত্রটা চক্ষু এড়ায় না আশিনের।বিভ্রান্ত হলেও মনে মনে হেসে ওঠে আশিন।লোকটি ধীর পায়ে এগিয়ে আসতে থাকে।একটা সময় হুট করে এসে আশিনের দিকে ছুড়ি দিয়ে আক্রমণ করার আগেই আশিন বামে সড়ে গিয়ে তড়িৎ বেগে হাত থেকে ছুড়িটা ছিনিয়ে নিয়ে গায়ের সমস্ত জোর দিয়ে লোকটিকে টান মেরে উলটো ঘুড়িয়ে ছুড়িটা লোকটির গলায় ধরে।হকচকিয়ে যায় লোকটি।আশিন কেমন শান্ত আওয়াজে বলে,“ কি চাই?”
লোকটি শব্দ করে না।হয়তোবা আশিনকে প্রতিহত করার উপায় খুজছে।আশিন সাবধানতার সাথে বলে,“ হুশ।একদম চালাকি করবি না।নয়তো গলা কেটে দিতে সেকেন্ডের বেশি সময় লাগবে না।এসবে আবার আমি খুবই দক্ষ।”
ভীতসন্ত্রস্ত হয় লোকটি।বারবার শুকনো ঢোক গিলতে থাকে।কয়েকজোরা পায়ের আওয়াজ শোনা যায়। আশিন কে আসছে বোঝার চেষ্টা করে।এরই মাঝে লোকটা সুযোগ পেয়ে হাতের কনুই দিয়ে আশিনের পেটে ধাক্কা দিয়ে হুট করেই দৌঁড় শুরু করে।আশিন ছিটকে পেছনে সড়ে যায়।নিচে পড়ে যেতে নিয়েও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে।পেছনের পায়ের আওয়াজ জড়ালো হয়।কাছাকাছি এসেছে একদম।পেছনে ঘুরে তাকাতেই দেখে একজন মেয়ে এবং দুজন ছেলে।মেয়েটিকে ভালোভাবে দেখতে থাকে আশিন। পোশাকে আধুনিকতার ছোঁয়া।বোঝা যাচ্ছে শহুরে মেয়েটি।চোখে কালো চশমা। আশিন ভাবে এত রাতে চশমা কে পড়ে?মেয়েটি আশিনের আরও সন্নিকটে এসে বলে,“ সাহসী আছেন বলতে হবে।”
আশিনের উচ্চতা বরাবর মেয়েটির উচ্চতা।আশিন ক্ষীণ হাসে।চোখ স্থির রেখে জিজ্ঞাসা করে,“ কে আপনি?”
মেয়েটি হাসে।হাসিটা অনেক সুন্দর।শুধু হাসিই নয় মেয়েটি নিজেও অনেক সুন্দরী।একশ জন সুন্দরীর মাঝে মেয়েটি সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো সুন্দরী। মেয়েটি দাম্ভিকতার সাথে উত্তর দেয়,
“ আমি মঞ্জুরি।গোয়েন্দা টিম প্রধান,…
চলবে,,, ,…