আদ্রিয়েন ছিলেন ‘ সিএমসি ’ কোম্পানির হেডকোয়ার্টারের একজন অণুজীববিজ্ঞানী। আদ্রিয়েনের বাবা একজন বাংলাদেশী আর মা জার্মান ছিলেন। আদ্রিয়েন দেখতে বাংলাদেশীদের মতো হলেও চোখজোড়া বাদামী রঙা। ১৯৯৫ সালের দিকে তিনি বাংলাদেশে স্ত্রী এবং এক মেয়ে সন্তান নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন অনুন্নত সিএমসি কোম্পানির বিডি শাখার হেড হিসেবে। উনার স্ত্রী মালেকা শাহ ছিলেন বাংলাদেশী একজন ট্যুরিস্ট। জার্মানীতে আদ্রিয়েন আর মালেকার দেখাদেখি হয় এরপর হয় প্রেম বিনিময়। এরপর বিয়েটাও সেড়ে ফেলেন তারা। বিয়ের দুইবছর পরই ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান জন্ম আসে তাদের কোলজুড়ে। আদ্রিয়েন খুশি হয়ে নাম রাখেন ‘ আশিন ’।
সিএমসি কোম্পানির ওনার যখন বললেন আদ্রিয়েনকে বাংলাদেশ যেতে আদ্রিয়েন স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাংলাদেশ চলে আসেন। এরপরই বাংলাদেশের সিএমসি শাখার হাল ধরেন তিনি। বিশ্বস্ত ব্যাক্তি বা বন্ধু বললেও ভূল নয় উরফান মহান আর অশোক তালুকদার ছিলেন আদ্রিয়েনের সহযোগী। উরফান মহানের থেকে আদ্রিয়েনের অশোক তালুকদারের সাথেই সম্পর্ক বেশি ভালো ছিলো। উরফান আর অশোক বন্ধু ছিলো এমনকি উরফান নিজের বোন উর্মিলাকে অশোকের সাথেও বিয়ে দিয়েছিলো বছর তিনেক আগে। দুবছর পর উনাদেরও কোলজুড়ে আসে দুই যমজ সন্তান, উচ্ছ-উৎস। সবকিছু ভালোই চলছিলো তবে ১৯৯৭ সালের দিকে হঠাৎ সিএমসি কোম্পানি হেডকোয়ার্টার থেকে খবর আসে আদ্রিয়েনকে মারার জন্য। এর কারণ আদ্রিয়েন ভয়ানক কিছু নিয়ে গবেষণায় মত্ত ছিলেন। তবে এই তথ্যটা ছিলো একদমই ভুল তথ্য। আদ্রিয়েন বুঝতে পারছিলো না তার নামে কে এই ভূল তথ্যদি হেডকোয়ার্টারে ছড়িয়ে দিয়েছে। সেসব ভাবার মতোও সময় ছিলো না তখন কারণ কিছুদিন পরই হেডকোয়ার্টার থেকে কিছু এজেন্ট আসে আদ্রিয়েনকে মারার জন্য। বন্ধু উরফান অসুস্থ থাকায় অশোকই সমস্ত সহযোগীতা করে আদ্রিয়েনকে।
আদ্রিয়েনকে পাঠানো হয় কুমিল্লা জেলার ‘ বাহারি ’ নামক এক গ্রামে। এতে করে হেডকোয়ার্টার থেকে আসা এজেন্টরা আদ্রিয়েনকে খুঁজে পায় না। জিজ্ঞাসাবাদ করলে অশোক তালুকদার সমস্ত মিথ্যা বলে দেন। পরবর্তী একবছর সমস্তকিছু স্বাভাবিকই ছিলো। তবে উরফান মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফেরার পর আদ্রিয়েনের মেয়ে আশিনকে নিয়ে চলে আসেন ঢাকায়। আদ্রিয়েনও তখন দ্বিমত পোষণ করেন নি। তবে তার কিছুদিন পরই জানা যায় হেডকোয়ার্টারের কিছু এজেন্ট আদ্রিয়েনের খোঁজ পেয়ে গেছে এবং আদ্রিয়েন ও তার স্ত্রী দুজনকেই মেরে ফেলে সেই গ্রামে। এতে সহায়তা করেছিলো গ্রামের কিছুজন লোক আর অশোক তালুকদার। আশিনের খোঁজ দেওয়া হয় নি কারণ অশোক নিজেও জানতো না আশিন কোথায় গিয়েছে। উরফান তাকে সেই কথা বলে নি। এদিকে উরফান যেন বন্ধুর মৃত্যুশোকে এতটাই ব্যথিত হয়েছিলো যে অশোককে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় উরফানের বোন উর্মিলা। স্বামীকে কিভাবে নিজের চোখের সামনে মরতে দেবেন তিনি।
উরফান বোনের দিকে তাকিয়ে কাজটা আর করতে পারেন না। এরপর উরফানই আশিনকে মানুষ করেছে আর তার বাবার মতো তাকেও একজন বিজ্ঞানী বানিয়েছে। সময়ের সাথে সাথে সিএমসিও বাংলাদেশে বেশ নামডাক করে ফেলে। আদ্রিয়েনের পরে উরফানকেই এই সিএমসি বিডি শাখার হেড বানানো হয়। অশোককে কাজ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
ধীরে ধীরে সিএমসি কোম্পানি নিষ্ঠার কাজ হতে বেরিয়ে অবৈধ সব উৎপাদনসহ অবৈধ গবেষণায় জড়িয়ে পড়ে। অথচ এই অবৈধতার নামে মিথ্যে তথ্যের জন্যই আদ্রিয়েনকে মারা হয়েছিলো। এদিকে আশিন বাবা-মায়ের ব্যাপারে কোনোকিছুই জানতো না। কারণ উরফান তাকে নিজের মেয়ের মতোই মানুষ করাই মেয়েটাকে ছোটবেলার সমস্ত স্মৃতি মুছে দিয়ে নিজের সাথে রেখেছেন। পরবর্তীতে আশিনকেও সিএমসি কোম্পানির অবৈধ সব গবেষণায় জড়িয়ে দেওয়া হয়। আশিনও নানা বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে থাকে। আর এদিকে আইও গ্রুপের ঔষধ কোম্পানিতে ঔষধের নাম করে ড্রাগসের উৎপাদনই বেশি করা হয়।
আশিন সমস্ত বিষয়ই জানলেও নিজেও কখনও সেসব কাজ করে নি আর না বাঁধা দিয়েছে। ২০২০ সালের দিকে সে বাড়িতে উরফান মহানের গোপন লাইব্রেরিতে উরফান মহানের অনুপস্থিতিতে ঢুকে সমস্ত ডকুমেন্ট সহ আদ্রিয়েনের মৃত্যুসহ সমস্ত ব্যাপারে জানতে পেরে আশিনের মস্তিষ্কে আগুন জ্বলতে শুরু করে। উরফান মহানের ওপর রেগে গিয়ে উরফান মহানকে মেরে দিতে চাইলেও পরবর্তীতে উরফান মহান তাকে বোঝায় এতে তার কোনো দোষ নেই। আশিনকে সিএমসি কোম্পানির এজেন্টদের থেকে বাঁচাতেই তার এসমস্তকিছু করা।
এদিকে আশিনের বাবা আদ্রিয়েনের সাথে বন্ধুত্বের নামে অশোক তালুকদারের সেই বেইমানিটাই যেন আশিন সবচেয়ে বেশি মস্তিষ্কে গেথে রেখেছিলো একদম কোণায় কোণায়। এমনকি ২০২০ সাল থেকেই মিশনে নামে কুমিল্লার সেই বাহারি নামক গ্রামে তার বাবাকে মেরে ফেলার পেছনে যারা যারা জড়িত ছিলো গ্রামের মানুষজন তাদের মারার জন্য। তবে তারা বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চলে গিয়েছিলো পুরো পরিবারসহ। আশিন সেই ডকুমেন্ট আর উরফান মহানের সাহায্যেই সেই লোকগুলোকে একেক করে বের করে আর ধীরে ধীরে মারতে থাকে। তবে সমস্যাটা তখনই হয় যখন আশিনসহ পুরো সিএমসি কোম্পানির পেছনে যখন একজন উকিল ইনভেস্টিগেট করা শুরু করে।
আশিনের অবশ্য সমস্যা না থাকলেও এদিকে তাকে ছোট থেকে মানুষ করা উরফান মহানের প্রতি শ্রদ্ধা থাকায় তাকে উকিলকে মারতেই হতো। তবে আশিন যখন জানতে পারে এই উৎস অশোক তালুকদারেরই ছেলে তখন আরও বেশি রেগে যায়। আর মারার জন্য ভয়ানক সব পরিকল্পনা করতে থাকে। এদিকে অশোক তখন গ্রামে পরিবার নিয়ে বাস করছিলো সবার অগোচরে। অথচ সে জানে উরফান তার সম্পর্কে সব জানে। এটা তখনই বেশি ভয়ানকভাবে ধরা পড়ে যখন উর্মিলা মহান মারা যাওয়ার পর উষা মহান তাকে বিয়ে করার জন্য গ্রামে আসে। সাথে ছয় বছরের এক মেয়েকে নিয়ে। উরফান তাকে চিঠি পাঠিয়েছিলো তাদের সাথে পুনরায় কাজ করার জন্য। সে অশোককে ক্ষমা করে দিয়েছে। অশোকও রাজি হয়ে যায়। আর গ্রামে একটি হাসপাতাল বানিয়ে গ্রামের যুবক বয়সী ছেলেদের মাদকাসক্তিতে আকৃষ্ট করানো শুরু করে। তবে এসবেরই আবার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তার ছোট ছেলে উৎস। উচ্ছ সমস্যা ছিলো না। সে জাত মামা ভক্ত। উরফান মহানের সমস্ত কথা শোনে সে। এই ছেলে দুজনের জন্যই উরফান বোন জামাইকে ক্ষমা করে দিয়েছিলো।
তবে উৎস যে নিজের বাবা সহ এই সিএমসি, আইও কোম্পানি ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লাগবে এই বিষয়টা ধারণাতেও আনতে পারেন নি অশোক তালুকদার। উরফানই জানিয়েছে তাকে তার ছেলের কথা। উৎস যখন বাড়িতে আসে তখন অশোক তালুকদার নিজেকে সামলে রাখেন সেই অবৈদগ ব্যবসা থেকে। তবে তাদেরই অগোচরে আবার কেউ একজন ব্যবসা চলমান রাখে। কে সে এটা আজও অজানা। অশোক তালুকদারের পরিবারের কেউ এ সম্পর্কে টু শব্দটাও জানে না। শুধুমাত্র উষা,উচ্ছ আর কল্পনা বাদে এই সম্পর্কে সবাই অজ্ঞাত। উষা অবশ্য পরে তাদের এই অনৈতিক, অবৈধ কাজ সম্পর্কে উৎসকে সবকিছু বলে দিতে চাইলে আর আত্মসমর্পণ করে দেশের সরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশ কিছুজন এমপিকে পুরো দেশের সামনে আনতে চাইলে উরফান আশিনকে দিয়ে তাকে মেরে ফেলে। উৎসও কিছু করতে পারে নি অবশ্য। উৎস নিজেও কিছু করতে পারছিলো না কারণ দেশের সরাষ্ট্রমন্ত্রী যেখানে হাত আছে সেখানে সে উকিল হয়ে সবার সামনে এসব তুলে ধরলে পরবর্তীতে সরকার তাকেই না আবার দোষারপ করে। এদিকে উৎস আবার আশিনের প্রতি দূর্বল হয়ে পরলে এতেও কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে।
উরফান মহানও উৎসকে কিছুই করতে পারছিল না বোনের ছেলে হওয়ায়। নয়তো উৎসকে সড়ানো খুব একটা কঠিন ছিলো না। কিন্তু উনি নিজেও এখন সন্দিহান আর কতদিন তিনি এই উৎসকে সামলে রাখতে পারবেন। এজন্যই তো প্ল্যান করেছেন দেশের অবস্থা রসাতলে যাক উরফান মহান উনার পুরো পরিবার আর আশিনকে নিয়ে জার্মানী চলে যাবেন। সেখানে গিয়ে বাকি জীবনটা আয়েশীভাবে চলে যাবে। দেশে এই সব এমপি মন্ত্রী নাহয় ফাঁসিতে ঝুলুক এতে উনার কোনো আফসোস কিংবা দরদ নেই। উরফান মহান শুধু টাকা চেনেন। জার্মানীতে সমস্তকিছুই ঠিক করে রেখেছেন তিনি। সেখানে চলে গেলে অন্তত সিএমসি কোম্পানির ওনারের সাহায্যেও বেঁচে যাবেন তিনি।
আর আশিন! সে তো বাবা মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়ে তবেই জীবন ত্যাগ করবে ভেবে রেখেছে। এমস্তকিছু তথ্য যখন তার কানে আসে আশিন শুধুই হাসে। সে নিজেও উরফানদের পক্ষে না আর না আবার বিপক্ষে। আশিন মধ্যমায় হাঁটে সবসময়। এদিকেও না ওদিকেও না। বাবা মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধের পর সেও নিরুদ্দেশ হয়ে যাবে। আর সাথে নিজের তৈরি করা সেই আবিষ্কার সেটাও ধ্বংস করবে বলেই পরিকল্পনা করেছে। সিএমসি কোম্পানি যদি বাঁধা দেয় তবে আশিন ওই কোম্পানিও ধ্বংস করে দেবে।
_____________________________
শীতের নিষ্ঠুর প্রকোপে প্রকৃতি শুষ্ক থাকে। শহরে তো সুউচ্চ দালানকোঠা, যানবাহন, ময়লা খাল-বিল ছাড়া প্রাকৃতিক কোনো সৌন্দর্য দেখা যায় না তাই সেখানে এর প্রভাব কম। তবে গ্রামে শীতের প্রভাব বিস্তর। এইযে চেয়ারম্যান বাড়ির পেছনের বাগানে থাকা বড় গাছগুলোর পাতা সব ঝড়ে গেছে। রুবেল তালুকদার ভীষণ হতাশ এই নিয়ে। তবে শীতকালীন ফুলের সমাহারে কিছুটা শান্ত রেখেছেন নিজেকে।
সময়টা তখন গভীর রাত।
রূপক নিজের রুমে বিশাল বারান্দাটার কাছে দাঁড়িয়ে ফোনে উৎসর সাথে কথা বলছিলো। কপালে গাঢ় ভাঁজ ফেলে সামনের দিকে নিগুঢ় চেয়ে।
‘‘ আশিন যে তোকে মারে নি, সাতকপাল তোর।’’
ওপাশ হতে উৎসর হাসির আওয়াজ শোনা গেলো। রূপক ব্যাঙ্গ করে বললো,‘‘ প্রেমে পড়েছিস?’’
‘‘ অনেক আগেই তো।’’
এপাশে রূপক হাসলো। উৎসর হাতে কেইসটা এসেছে দেড়বছর হবে। তখন সময়টা ছিলো গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়। রৌদ্রেরঝাঁজ তখন সারা প্রকৃতি জুড়ে। তপ্ত হাওয়ায় শ্বাস নিলেও যেন গায়ে আগুন ধরে। এই গরমে বিচারকের বাড়ি থেকে যখন নিজগৃহে ফিরছিলো উৎস। সেসময় দেখে মেলে ভয়ানক মানবী সেই আশিনের। যার মুখজুড়ে ছিলো পবিত্রতার ছাপ। শুদ্ধ, কোমল আর রূপবতী সেই নারীর প্রথম দর্শনেই উৎসর মনের কোঠায় লাড্ডুগুলো একেক করে ফুটছিলো। অথচ সে ফিরছিলো আশিন নামক ভয়ানক সেই মানবীর সম্পর্কে শুনেই, কিন্তু আফসোস উৎস তখন বুঝতে পারে নি এই সেই মেয়ে; যার ভয়ানক সব তথ্যাদি কিছুক্ষণ আগেই সে জানতে পেরেছে। এরপর দেখা হয় নি কয়েক মাস। তারপর যখন গ্রামে বাবার অবৈধ ব্যবসাটা বন্ধ করার জন্য এতদিনের লুকোনো নিজেকে ধরা দিলো এক বখাটে সেজে তখনই তাকেই মারার জন্য আসলো স্বয়ং আশিন নিজেই।
অথচ উৎস জানতো আশিন তাকে মারতে আসবে, তবে সে জানতো না এই সেই মেয়ে যে তার মন চুরি করার মতো এতো ভয়ানক কাজ করে আবার তাকেই মারতে এসেছে। ছবি হাতে থাকা স্বত্তেও উৎস আশিনকে দেখে নি সেটাই উৎসর অন্যতম আফসোস।
রূপক চমৎকার হেসে সুরেলা গলায় গান ধরলো,
‘ ভালোবাসা বুঝি এমনই হয়?
এমনই হয়? ’
ওপাশ হতে উৎসর হাসির আওয়াজ শোনা গেলো। কেমন অদ্ভুতভাবে বললো,‘‘ এমন এক মানবীকে ভালোবেসেছি, যাকে কিনা ভালোবাসা একদমই অনুচিত। সে যে সাধারণ নয়। তার মস্তিষ্কজুড়ে শুধুমাত্রই প্রতিশোধ শব্দটা ঘুরে চলেছে। তার রূপে মোহিত হওয়া যাবে, তাকে ভালোবাসা যাবে তবে তাকে নিজের করে পাওয়া যাবে না। তবুও যতদিন বাঁচি ততদিন চেষ্টা করে যাব। ভালোবেসে যাব।’’
রূপক উৎসাহ দিয়ে বললো,“ বেস্ট অফ লাক ব্রো।’’
উৎস এবার কিছুটা
সিরিয়াস হয়ে প্রশ্ন করলো,‘‘ হাসপাতালের অবস্থা কেমন? বাবা কি এখনও শান্ত নাকি কোনো পরিকল্পনা পেতে রেখেছে? বাবার হাবভাব কেমন?’’
গ্রিলে হাত রাখলো রূপক। অশোক তালুকদার কিছুদিন যাবৎ বেশ চিন্তিত থাকেন। প্রতিনিয়ত কারও না কারও সাথেই কথা বলেন। রূপককে যখন দেখেন তখন স্বাভাবিক ব্যবহার করেন। হয়তো তিনিও বুঝেন বাড়িতে একটা গুপ্তচর আছে। তিনি তো জানেনও তার ছেলে তার সম্পর্কে সব জেনে গেছেন। এতে যে তারই ভীষণ ক্ষতি। উৎসকে মারার চেষ্টা করা হবে। অশোক তালুকদার ছেলের পেশা নিয়ে অতোটা চিন্তিত ছিলেন না যতটা চিন্তিত হয়েছেন ছেলের মিশন জেনে। ছেলেকে বাঁচাতে তিনি এখন মরিয়া। যার কিছুটা ছাপ হলেও মুখে পরিদর্শিত।
‘‘ চিন্তিত থাকেন। হয়তোবা তোকে নিয়ে। কারণ কার পেছনে লেগেছিস সেটা তো আর অজানা নয়।’’
কথাটা বলে চোখ গেলো নিচে। কেউ একজন টর্চলাইট জ্বালিয়ে বাশবনের দিকে যাচ্ছে। রূপকের রুমের লাইট অফ করা ছিলো মানুষটা তাকে দেখতে পাবে না। রূপক ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করলো কে ওই ব্যাক্তি। এ আবার সে নয় তো যে শান্তিপুর গ্রামের হাসপাতালের অবৈধ ব্যবসা গোপনে চালিয়ে গিয়েছে? রূপক উৎসর ফোন কেটে নিচে যায়।
চলবে,….