দেশের আদালতের রায়ে বাবা হেরে গেলেন৷ তিন সন্তানের তিনজনকেই পেলেন মা৷ বাবা’রা সবসময় হেরেই যান৷ সেটা ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয় কিংবা বাস্তবতার বিবেচনায়৷ ঘুম থেকে উঠে আমার মেয়ে প্রথমে তার মাকে খোঁজে৷ কোথাও ব্যথা পেলে কিংবা অসুস্থ হলে বাবা নয়, মা বলেই কাঁদে৷ তার মায়ের সঙ্গে আমার যখন উচ্চবাচ্য হয়, পরিস্থিতি বিবেচনার প্রয়োজন নেই, মেয়ে সবসময়ই মায়ের পক্ষে৷ মুসলিম আইন বলে, বাবা অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের আইনগত অভিভাবক হলেও মা হবেন তত্ত্বাবধায়ক। সব থেকেও বাবারা সবসময়ই ভারপ্রাপ্ত৷
অথচ মধ্যরাতে যখন ঘুম ভেঙে যায়, আবছায়া আলোয় যখন মেয়ের মুখটার দিকে তাকাই, মনে হয় জীবনটা মন্দ নয়৷ মেয়ে একটা অনাকাঙ্খিত হাঁচি দিলেও চোখের কোনে জমে মেঘ, দুনিয়া আমার অন্ধকার৷ মা ৯ মাস তাকে বহন করেছে৷ তবে এই নয় মাসের প্রতিটা দিন আমি কয় ঘণ্টা ঘুমিয়েছি হিসেব করে বলে দিতে পারবো৷ আমৃত্যু আমার মেয়েকে আমি বহন করবো ইন-শা-আল্লাহ৷ তবে কোন দায়বদ্ধতায় নয় ‘শর্তহীন ভালোবাসায়’৷ তবে আমি জানি, আমি সবসময়ই ভারপ্রাপ্ত৷
সন্তানরা ফোনের ওপাশে প্রথমে মায়ের কণ্ঠই প্রত্যাশা করেন৷ ঘরোয়া আড্ডাতে মা মধ্যমণি, বাবার সঙ্গে কথা বলাতে আরামের অভাব৷ বাবা মানে প্রত্যাশা, বাবা মানে চাহিদা পূরণের হাতিয়ার৷ বাবা মানে গাধার মতোন খেটে যাওয়া৷ তাতে অবশ্য কোন বাবাই ক্লান্ত নন৷ কারণ বাবাদের ক্লান্তি ছুঁতে মানা৷ কিন্তু যখন স্বীকৃতির কথা আসে, কেন জানি বাবারা সবসময়ই পিছিয়ে৷ বাবারা যে হিমালয়, বাবারা বড্ড অসহায়৷